বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সদরঘাটে এসে আক্কেলগুড়ুম যাত্রীদের

  •    
  • ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৭:৩৭

'চাঁদপুর যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। বাসে আসতে ২ ঘণ্টা লেগেছে। এসে দেখি লঞ্চ নেই। ঢাকায় এসেছি ডাক্তার দেখাতে। বাসে চড়তে পারি না। সঙ্গে ২ বছরের ছেলে রয়েছে, বাসে অস্থির হয়ে যায়। এখন কিছু করার নেই। যাত্রাবাড়ী গিয়ে বাস পাই কিনা দেখতে হবে।’

ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে নৌ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে স্থবির হয়ে আছে ঢাকার প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী নৌযানগুলোও। সকাল থেকে লঞ্চ ছেড়ে না যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ফাঁকা পড়ে আছে পনটুন, শ্যামবাজার ঘাটে জড়ো করে রাখা হয়েছে লঞ্চ। অনেকটায় ফাঁকা পড়ে আছে টার্মিনাল এলাকা, নেই নৌশ্রমিকদের উপস্থিতিও।

ধর্মঘটের কথা জানা না থাকায় ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সদরঘাট থেকেই অনেকে বিকল্প বাহন হিসেবে পিকআপ ভ্যান ও মাইক্রোবাসে করে রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যে। চাঁদপুরে মাইক্রোবাসে খরচ পড়ছে ৭০০টাকা ও পিকআপভ্যানে ৪০০ টাকা।

রাজধানীর মিরপুর-১২ থেকে আসা ইসমত আরা বলেন, 'চাঁদপুর যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। বাসে আসতে ২ ঘণ্টা লেগেছে। এসে দেখি লঞ্চ নেই। ঢাকায় এসেছি ডাক্তার দেখাতে। বাসে চড়তে পারি না। সঙ্গে ২ বছরের ছেলে রয়েছে, বাসে অস্থির হয়ে যায়। এখন কিছু করার নেই। যাত্রাবাড়ী গিয়ে বাস পাই কিনা দেখতে হবে।’

মুগদা এলাকা থেকে আসা মেহেদী হাসান বলেন, ‘চাঁদপুর যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। এখন বাসে যাব ভাবছি। আগেভাগে জানা থাকলে ভোগান্তি হতো না।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবহন পরিদর্শক হুমায়ূন আহমেদ জানান, রাতে থেকে বিভিন্ন রুটের ৩৫টি লঞ্চ সদরঘাটের পনটুনে ভিড়েছে। সকাল থেকে ১০ টি লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল চাঁদপুর ও ইলিশায়, একটাও ছেড়ে যায়নি। শুধু সকালে একটি লঞ্চ ভোলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালু থাকবে বলে জানান নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব আতিকুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেন, ‘কর্মবিরতীতে সারাদেশের নৌযান শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন, শতভাগ শ্রমিক অংশ নিয়েছেন। আমাদের যৌক্তিকতা দাবি, দাবিগুলো মেনে নেয়া হলে আমরা কর্মসূচি তুলে নেব।’

লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘লঞ্চ না চললে তাদেরও লস, আমাদেরও ক্ষতি। এখনও আমাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা হয়নি। আমরা চাচ্ছি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।’

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘হঠাৎ করেই নৌযান শ্রমিকরা এই কর্মবিরতিতে নেমেছেন। এতে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। লঞ্চ না চলাচল করার বিষয়টি না জানার কারণে অনেক যাত্রী বন্দরে এসে আবার ফিরে যাচ্ছেন।’

সমাধানের পথে না হাঁটলে পরিস্থিতির দায় সরকার এবং মালিককে নিতে হবে বলে জানিয়ে নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতারা দুপুর ১২ টায় বাংলাবাজারে বিক্ষোভ করে।

এতে সংগঠনের সদস্য আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যায়সঙ্গত দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। ২০১৬ সালের মজুরি দিয়ে বর্তমান বাজার দরে চলা সম্ভব নয়। শ্রমিকের দাবি যৌক্তিক। সরকার মালিকদের ভাষায় কথা বললে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে।’

শনিবার নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে এরও নিন্দা জানানো হয় কর্মসূচিতে। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তারা।

যেসব দাবি

সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ ছাড়া নৌ শ্রমিকদের অন্য দাবিগুলো আছে, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দেয়া, বাল্কহেডের রাত্রীকালীন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা, বন্দর থেকে পণ্যপরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করা, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা।

কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া। কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন, বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ ভাগ কার্যকর করার দাবিও আছে শ্রমিকদের।

এ বিভাগের আরো খবর