জিএম কাদের ও রওশন এরশাদ এক সঙ্গে বসলেই জাতীয় পার্টিতে দ্বন্দ্বের মীমাংসা হয়ে যাবে বলে মনে করেন দলের বহিষ্কৃত নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা। বলেছেন, ওই দ্বন্দ্বের মীমাংসায় তিনি ভূমিকা রাখবেন।
৫ মাস চিকিৎসা শেষে রোববার দেশে ফেরা রওশন এরশাদকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘জি এম কাদের ও রওশন এরশাদের মধ্যে মনোমালিন্য আছে। এটা আগেও বলেছি, দুই জন এক সঙ্গে বসলে এটার সমাধান হয়ে যাবে ‘
জাতীয় পার্টিতে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় রওশন থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার এক চিঠিকে কেন্দ্র করে। গত ৩১ অক্টোবর হঠাৎ করেই ২৬ নভেম্বর দলের সম্মেলনের ডাক দেন। পরে অবশ্য তা স্থগিত করা হয়।
জি এম কাদের ও তার অনুসারীরা রওশনের এই ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রওশন এমনটা করতে পারেন না। এরপর রওশনকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে গিয়ে জি এম কাদেরকে সেই পদে বসাতে স্পিকারকে চিঠি দেয় জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল। পরে দলে শুরু হয় বহিস্কার ও অব্যাহতি দেওয়া। শুরুর দিকে রওশনের পক্ষে কথা বলায় রাঙ্গাকেও দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
২০১৯ সালে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরও জিএম কাদের ও রওশন পন্থিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তখন দ্বন্দ্ব মীমাংসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন রাঙ্গা।
এবারও একই ভূমিকা রাখার আশা করে তিনি বলেন, ‘যদি তাদের (রওশন ও জিএম কাদেরে) মীমাংসা করা দরকার পড়ে, আই উইল ডু ইট।’
জাতীয় পার্টিতে এমন অস্থিরতা কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এরশাদ সাহেবের সময়ও আমরা অস্থিরতা দেখেছি। যেটা অন্যান্য দলে হয়তো এতটা না। অস্থিরতা বিভিন্ন কারণে, একটা দল ৩২ বছর ক্ষমতার বাইরে, মনোমালিন্য থাকতেই পারে।’
রওশন দেশে ফিরলেও নেতা কর্মী তাকে সংবর্ধনা দিতে যাননি। এর কারণ কী- এমন প্রশ্নে রাঙ্গা বলেন, ‘অনেক নেতাকর্মী বিভিন্ন কারণে হয়তো আসেনি। এটা বিভক্তির কারণে নয়, অনেকে আসছিলেন, রাস্তা থেকেও তারা ঘুরে গেছে।
‘তাদের ভয় দেখানো হয়েছে, গেলে মনোনয়ন দেবো না, এইভাবে বলা হয়েছে। সবাই তো আমাদের মতো সাহসী না, অনেক এমপি, প্রেসিডিয়াম মেম্বার ঝামেলা এড়াতে চেয়েছেন।’
রওশন আলাদা কাউন্সিল ডাকার পর জাতীয় পার্টি থেকে এক থেকে দেড় শ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা সবাই দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিল। তাদেরকে বিভিন্ন কারণে বের করে দেয়া হয়েছে। এই নেতাকর্মীরা ফিরে আসলে দলটা বিরাট শক্তিতে পরিণত হবে। আমি মনে করি, মনোনমালিন্যটা দলের ভালোর জন্যই হয়েছে, আগামীতেও ভালো হবে।’