পাবনার ঈশ্বরদীতে ঋণখেলাপি মামলায় গ্রেপ্তার ১২ কৃষককে জামিন দিয়েছে আদালত।
রোববার বেলা ১১টার দিকে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক মো. শামসুজ্জামান এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে এই মামলার অন্য ২৫ আসামিকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন তিনি।
জামিন পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের শুকুর প্রামাণিকের ছেলে ৫০ বছর বয়সী আলম প্রামাণিক, মনি মণ্ডলের ছেলে ৪৫ বছর বয়সী মাহাতাব মণ্ডল, মৃত কোরবান আলীর ছেলে ৫০ বছরের কিতাব আলী, হারেজ মিয়ার ছেলে ৪৩ বছরের হান্নান মিয়া, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ৪০ বছরের মোহাম্মদ মজনু, মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে ৫০ বছরের মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান, মৃত সোবহান মণ্ডলের ছেলে ৫০ বছরের আব্দুল গণি মণ্ডল, কামাল প্রামাণিকের ছেলে ৪৫ বছরের শামীম হোসেন, মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে ৪৩ বছরের সামাদ প্রামাণিক, মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে ৪৫ বছরের নূর বক্স, রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ৪৬ বছরের মোহাম্মদ আকরাম এবং লালু খাঁর ছেলে ৪০ বছরের মোহাম্মদ রজব আলী। গ্রেপ্তার সবাই প্রান্তিক কৃষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি গ্রুপ বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের পাবনা জেলা কার্যালয় থেকে জনপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়। ঋণখেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন।
২৩ নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পরোয়ানাভুক্ত ৩৭ জনের মধ্যে ১২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
কৃষকদের পরিবারের দাবি, ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। তাদের পাস বই ও জমা স্লিপও রয়েছে। অথচ সেই অর্থ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।
কৃষকরা জানান, গত বুধবার যখন কৃষকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়, তখন তারা গাজরের ক্ষেতে কাজ করছিলেন। বাড়িতে ও বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তারা ঋণের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বলেন, কৃষকরা ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের অফিশিয়াল ব্যবস্থা নিয়েছি। তারা তাদের আইনগত সহায়তা পেয়েছেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাইদুর রহমান সুমন, কাজী সাজ্জাদ ইকবাল লিটন ও মইনুল ইসলাম মোহন।