বগুড়া সদরে নিজ বাড়িতে জামাল উদ্দিন খাজা নামের এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ মিলেছে। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি মোজাফফর হোসেনকে আটক করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
এর আগে শনিবার সকালে শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকা থেকে জামালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতের কোনো একসময় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৬০ বছর বয়সী জামাল একটি বেকারি প্রতিষ্ঠানে পণ্য পরিবহনের কাজ করতেন। এ ছাড়া বাড়ির ভেতরে থাকা একটি মাজার রক্ষণাবেক্ষণও করতেন তিনি।
মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আটক মোজাফফর রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি নিহত জামালের মেজো বোনের স্বামী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মুন্নাফ জানান, নিহতের বাড়ির ভেতরে একটি পুরোনো মাজার রয়েছে। তাই বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় সিরাজগঞ্জ থেকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসে সেখানে কাজ করছে।
স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহতের বড় বোন আম্বিয়ার মৃত্যু হয়। এ জন্য পরিবারের সবাই ওই রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের ফুলদীঘি বোনের বাড়িতে ছিলেন। সন্ধ্যায় জামাল বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে তিনি একাই ছিলেন। কারণ শুক্রবার সকালে ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি চাঁদমুহাতে ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াতে গিয়েছিলেন তার স্ত্রী। সকালে তারা এসে অনেক ডাকাডাকি করেও জামালের কোনো সাড়া পাননি। পরে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে ভেতরে ঢুকে তারা জামালের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
জামালের ছোট ভাই জহির উদ্দিন বলেন, ‘ভাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। তিনি কারও সঙ্গে কখনও তর্ক বা দ্বন্দ্বে জড়াতেন না। আমার মেজো বোনের স্বামী মোজ্জাফর রাজমিস্ত্রি হওয়ায় আমাদের সবার বাড়ি নির্মাণ করেছেন। জামাল ভাইয়ের বাড়ি নির্মাণের সময় কিছু ভুল ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে দ্বন্দ্ব হতে পারে বলে মনে হয় না।’
জহিরের স্ত্রী পারভীন বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ও তার ভাইয়েরা ছোট থেকেই এই মাজার দেখে আসছেন। শুনেছি মহাস্থানের শাহ সুলতান বলখীর (র.)-এর সহযোগীর মাজার এটি। এই মাজার আমার ভাশুর জামাল উদ্দিন দেখাশোনা করতেন। কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান বা অন্য কিছুর আয়োজন কখনও হয়নি এখানে।’
বগুড়া সদর থানা পুলিশের তদন্ত পরিদর্শক বাবু কুমার সাহা বলেন, ‘ক্রাইম সিন ইউনিট এসেছিল। তাদের কাজের পর জামালের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে ক্রাইম সিন কাজ করা অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে ডিবি পুলিশ নিহতের বোনজামাই মোজাফফর হোসেনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যান। এ সময় কাপড়ে মোড়ানো একটি লোহার শাবলও জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে এই আটকের বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ ডিবির ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে কাজ চলছে। এখন কিছু বলা যাবে না।’