দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সোমবার। ১০ বছরের মাথায় এই সম্মেলনে ভোটের বদলে সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে কাউন্সিলরসহ নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ভাটা পড়েছে। আর সিলেকশন কমিটিতে পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছে ছুটছেন পদপ্রত্যাশীরা।
জেলা শহরের গোর-এ শহীদ বড়ময়দানে তৈরি করা হচ্ছে সম্মেলন মঞ্চ। শহর ছেয়ে গেছে ব্যানার-পোস্টারে।
দলের একাধিক সূত্র জানায়, এবার সিলেকশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। তাই উৎসাহ নেই কাউন্সিলরদের মধ্যে। সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশীরা কাউন্সিলরদের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় নেতাদের মন জয়ের চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, ‘কাউন্সিলে আমাদের ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন হলে নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকতো। আমাদের মধ্যেও উচ্ছ্বাস থাকত। বর্তমানে পরিস্থিতিটা উল্টো। এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী আমাদের কাছে আসেননি, এমনকি মোবাইল ফোনেও খবর নেননি। তাতেই মনে হচ্ছে, ভোটের কোনো দরকার নেই। কমিটি হবে সিলেকশনে।
‘যেহেতু সিলেকশনে কমিটি গঠন হবে, সেহেতু আমাদের করার কিছুই নেই। আর আমাদের মধ্যে তেমন উৎসাহও নেই। কাদেরকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হচ্ছে, শুধু তা দেখার জন্য অপেক্ষা।’
তৃণমূল নেতাকর্মীরা আরও জানান, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশীরা। দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দেন তারা। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে পোস্ট করছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে দুই জনের নাম শোনা গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন ১০ জন। জেলা আাওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ৪৭৭ জন কাউন্সিলর।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এরই মধ্যে মঞ্চ তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়েছে। বিকেলে জেলা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানসহ আমরা মঞ্চ ও মাঠ পরিদর্শন করেছি। আমরা একটি সুন্দর কাউন্সিল উপহার দিতে চাই।’
দলীয় সূত্র জানায়, সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন।
২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন হয়। এদিন কাউন্সিলে মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারকে সভাপতি ও আজিজুল ইমাম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। দুই বছর পর ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিন বছরের কমিটি পার করল ১০ বছর।