রাজশাহীতে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় শুক্রবার ভোরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, এ আগুনে ৫টি প্রাইভেট কার পুড়ে গেছে। গ্যারেজের আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের বহুতল ভবনে। এতে ভবনে থাকা একটি কনভেনশন সেন্টারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগার পর ওই ভবন থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। ভবনটির ১১ তলা জুড়ে বেশ কিছু পরিবার বসবাস করে। ঘটনার পরই ওই ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।
৬ তলার বাসিন্দা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক সুব্রত কুমার জানান, আগুন লাগার পরপরই তারা চিৎকার চেঁচামেচিতে জানতে পারেন। এরপরই সবাই যে যার মতো ভবন থেকে বের হতে শুরু করেন। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় অনেকেরই ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হয়।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের সূত্রপাত ১১ তলা ভবনের পাশের কার কেয়ার সেন্টার থেকে। পরে তা বহুতল ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনের বাইরের পুরো দেয়ালজুড়েই আগুনের চিহ্ন।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পরপরই গ্যারেজের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর উড়ে বাইরে এসে পড়ে।
গ্যারেজের এক কর্মী জানান, গ্যারেজে থাকা মোট ৫টি গাড়ির প্রতিটিই পুড়ে গেছে। তাদের গাড়ি মেরামত করার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতিও পুড়ে গেছে।
সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, খবর পাওয়ার পরপরই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। রাত ৪টা ২০ মিনিটে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। প্রথমে ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এলেও আগুনের ভয়াবহতা দেখে পরে আরও ১০টি ইউনিট আগুন নেভাতে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে যোগ দেয় সেখানে।
কার কেয়ার সেন্টারে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপরই দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। পাশের বহুতল ভবনের দুই তলার ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই তলায় গ্র্যান্ড তোফা কনভেনশন সেন্টার। এখানকার আসবাবপত্র পুরোপুরিই পুড়ে গেছে। এ ছাড়া কার কেয়ার সেন্টারে থাকা ৫টি প্রাইভেট কারসহ এখানকার বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে।
এই কর্মকর্তা জানান, ১১ তলা ভবনের ১০ তলার দেয়ালে আগুনের শিখা উঠলেও শুধু দুই তলাতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় এই ভবনের বাসিন্দারা বেশির ভাগই নিচে নেমে আসেন। তবে কিছু বয়স্ক মানুষ এবং শিশু ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। দমকল বিভাগের কর্মীরা তাদের নিচে নামিয়ে নিয়ে আসেন।
রউফ বলেন, ‘এখনো ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব হয়নি। তবে ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ২ কোটি টাকা হবে।’
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, আগুনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ফোর্স দিয়ে জনগণকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।