বিএনপির দ্বিতীয় পছন্দ অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ করতে দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দলটি। তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অটল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বক্তব্য দেয়ার পর রাতে বিএনপির পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চায়নি। নয়াপল্টনের জন্য চেয়েছে।
বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও দলটি সবশেষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছে, এমন কথা বলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের লেটেস্ট দাবি ছিল তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করতে চায়। প্রধানমন্ত্রীও আমাদের বলেছেন যে তারা যেখানেই পারমিশন চেয়েছে সেখানেই যেন দিয়ে দেই।
‘আমিও ডিএমপি কমিশনারকে বলে দিয়েছি বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করার পারমিশন দিয়ে দিতে। তাদের সভা করার অনুমতির কথা জানিয়ে দেয়া হবে। তবে বিএনপিকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে তারা কোনো ভায়োলেন্স করবেন না, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে না।’
এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া পাঠানো হয়।
একই দিন সকালে এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি দিলেও ওখানে সমাবেশ করব, না দিলেও সমাবেশ করব সেখানে।’
আগের দিন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঝামেলা না করে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কথা বলার পরও বিএনপির নেতার সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আপনারা সমাবেশে রাজি কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হলে জানাব। মিটিং হলে আপনারা জানতে পারবেন।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে প্রতি শনিবার বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে আসা বিএনপি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় জমায়েত করতে চায়। সেদিন দলটি জড়ো হতে চায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছে তারা।
তবে বিএনপি যে সেখানে অনুমতি পাচ্ছে না, সেটি গত কয়েক দিনে সরকারের বক্তব্যেই উঠে আসে। বিএনপি ১০ লাখ মানুষের জমায়েতের আগাম ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১০ লাখ মানুষ জমায়েতের মতো জায়গা নেই নয়াপল্টনে। তাই তাদের অন্য জায়গায় সমাবেশ করা উচিত।
এরপর তথ্যমন্ত্রী বিএনপিকে পূর্বাচলে সমাবেশ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এত মানুষের জমায়েতের মতো আর কোনো জায়গা নেই ঢাকায়।
মন্ত্রী এমনও বলেন, ‘রাস্তায় সমাবেশ করলে গণ্ডগোল করতে সুবিধা হয়। এই দুই উদ্দেশ্যে তারা সেখানে করতে চায়। সরকার তো গণ্ডগোল করার অনুমতি কাউকে দিতে পারে না।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে নয়াপল্টনে তাদের সমাবেশ করার কথা বলছেন বেশ জোরেশোরে।