বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিবন্ধনের শর্ত যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশনের হোঁচট

  •    
  • ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ২০:১৮

রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত মেনে চলছে কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। গত ১৩ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার ছিল প্রতিবেদন জমার শেষ সময়। কিন্তু ১৯টি দল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তিনটি দল সময় চেয়েছে। বাকিরা কিছুই জানায়নি।

রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের শর্তগুলো মেনে চলছে কি না সেটি যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়ল। কমিশনের বেঁধে দেয়া সময়ে তাদেরকে তথ্য দিল না আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো প্রধান দলগুলো।

নিবন্ধিত ৩৯টি দলের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ১৯টি দল। তিনটি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বাকি ১৭টি দল কিছুই জানায়নি।

যারা সময় চেয়েছে, তাদের মধ্যে আছে বিএনপি, যারা এক মাস সময় চেয়েছে। আওয়ামী লীগ সময় চেয়েও চিঠি দেয়নি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের অনুচ্ছেদ ৯০ (খ) এ একটি দল নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় সেগুলোর উল্লেখ রয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে-কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ের কমিটিতে সদস্য নির্বাচিত করা, ২০২০ সালের মধ্যে সব স্তরের কমিটিতে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখা, শিক্ষক বা ছাত্র কিংবা আর্থিক, বাণিজ্যিক বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী বা শ্রমিক সমন্বয়ে বা অন্য কোনো পেশার সমন্বয়ে সহযোগী বা অঙ্গ সংগঠন থাকবে না- এসব কথা উল্লেখ আছে।

দলগুলো এসব শর্ত মেনে চলছে কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। গত ১৩ অক্টোবর পাঠানো চিঠিতে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার ছিল প্রতিবেদন জমার শেষ সময়।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরনো দলগুলোর যাচাইবাছাই শেষ করতে চেয়েছিল। সেই হিসেবে এমনিতেই দুই মাস পিছিয়ে তারা। দলগুলোর কাছে সাড়া না পাওয়ার কারণে আরও পিছিয়ে পড়বে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আব্দুল হালিম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলগুলো প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে। অফিসিয়ালি আজকে লাস্ট ডেট। অনেকেই বলবে চিঠিপত্র পেতে দেরি হয়েছে। তারা হয়তো পরে দেবে।’

কমিশন সময় বাড়াবে কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সময় বাড়াবো না। কেউ দরখাস্ত তো করে নাই। আমার মনে হয় ওরা দিয়ে দেবে।’

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জমা দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না ওরা দেই নাই। এদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

বিএনপি ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের এক কর্মকর্তা। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ সংক্রান্ত কোনো আবেদন জমা দেন নাই।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে তো এখনও জানি না।’

সময় বাড়াবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। কারণ এ নিয়ে তো কোনো আলাপ হয় নাই।’

নিবন্ধনের শর্ত যদি পূরণ করতে না পানে তাহলে নিবন্ধন বাতিল করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী শর্ত পূরণ করতে পারে নাই। তার উপরে নির্ভর করে। নিবন্ধন বাতিলের মতো হলে হবে।’

ইসির জবাব সাড়া দিয়েছে যারা

জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি জেপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বিজেপি, গণফোরাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, মুক্তিজোট

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট ও জাকের পার্টি।

সময় চায় যারা

বিএনপি দুই মাস সময় চাইলেও তিন মাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।

নিশ্চুপ যারা

আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম এল), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি, বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ইসলামিক ফ্রন্ট এখনও কমিশনকে কিছু জানায়নি।

নিবন্ধন কবে, কাদের বাতিল

সেনা সমর্থিত তত্ববধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সাল থেকে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দলের নিবন্ধন প্রথা চালুর পর ৪৪টি দল নিবন্ধন পায়। এরমধ্যে ৫টি দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় বর্তমানে নিবন্ধিত রয়েছে ৩৯টি দল।

শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন পেলেও স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়। এছাড়া দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালত অবৈধ ঘোষণা করে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন না করায় ২০১৮ সালে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন এবং ভোটের পরে ২০২০ সালে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি-পিডিপি, ২০২১ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার নিবন্ধন বাতিল করে ইসি।

এ বিভাগের আরো খবর