ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
অনুসন্ধান করে আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আবার শুনানির জন্য আসবে। ওই দিন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে বিএফআইইউর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
এই আদেশের পাশাপাশি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
‘মহাসড়ক বন্ধক দেখিয়ে লুটপাট ১৫ কোটি টাকা’ শিরোনামে গত ১৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন গোলাম ফারুক নামে একজন। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি এই ঋণ বাগিয়ে নেন। সেটি ধরা পড়ার পর আবার দলিল সংশোধন করা হয়।
এবার আগের বন্ধক নেওয়া জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে ব্যাংকে জমা দেয়া হয়। সংশোধিত দলিলের জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপনের চেষ্টা করলে ব্যাংক জানতে পারে সেটিও ভুয়া।
সংশোধিত দলিলের জমির আসল মালিক জামির আলী। ২৭ শতাংশ ওই জমি দখলে নিতে একাধিকবার তার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা চলে। অবশেষে গত ১৪ এপ্রিল রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে ফারুকসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিরোজ আল মামুন ওরফে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ ২১ এপ্রিল রিট করেন। এর শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেয়।
রিটকারি আইনজীবী বলেন, মহাসড়কের জায়গা বন্ধক দিয়ে ঋণ নেয়ার বিষয়ে একটি পত্রিকায় ও একটি বেসরকারি টিভিতে প্রতিবেদন প্রচারিত হলেও সংস্থাগুলো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় নাম আসা গোলাম ফারুক একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু মহাসড়কের জমি বন্ধকের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চেয়ে আবেদন করা হয়।