ফেনীতে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে সোপর্দ করা সেই সাংবাদিক জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
ফেনীর যুগ্ম জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন কবিরের আদালতে বুধবার জামিন আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি ফেনী জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হলে তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান ফেনীর বিভিন্ন স্তরের গণমাধ্যমকর্মীরা।
এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে দাগনভূঞাঁ উপজেলার গজারিয়ায় গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফেনীর সাবেক বিতর্কিত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীরের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার হন সাংবাদিক এস এম ইউসুফ আলী।
পরে পুলিশ তাকে টেনেহিঁচড়ে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতের সোপর্দ করায় সাংবাদিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
বুধবার দুপুরে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফেনীর সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলগেটে সাংবাদিক ইউসুফ আলীকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জসিম মাহমুদ, যমুনা টিভির প্রতিনিধি আরএম আরিফুর রহমান, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার আতিয়ার হাওলাদার সজল, এসএ টিভির প্রতিনিধি মাইনুল রাসেল, স্বদেশপত্র সম্পাদক এন এন জীবন, এটিএন নিউজের প্রতিনিধি দিদারুল আলম, অজেয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভুঁঞা, বাংলানিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক সোলায়মান হাজারী ডালিম, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক স্টার লাইন বার্তা সম্পাদক নুর উল্লাহ কায়সার, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের জেলা সভাপতি এ বি এম নিজাম উদ্দিনসহ অনেকে।
ফেনী থেকে প্রত্যাহার হওয়া বিতর্কিত সাবেক পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্দেশে পুলিশের দেয়া গায়েবী মামলায় এস এম ইউসুফ আলী নামের এক সাংবাদিককে সোমবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ইউসুফ দৈনিক অধিকারের ফেনী ব্যুরোপ্রধান ও অনলাইন পোর্টাল ফেনী রিপোর্টের সম্পাদক এবং দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্র জানায়, ফেনীর ছাগলনাইয়া থানায় ইউসুফ আলীকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
তার মামলার কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু জানান, ইউসুফ আলী ২০১৯ সালের আলোচিত নুসরাত হত্যাকাণ্ডের কর্তব্যে অবহেলার দায়ে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের রোষানলের শিকার। ওই সময়ে গণমাধ্যমে জাহাঙ্গীর আলম ব্যাপক সমালোচিত হয়ে ফেনী থেকে প্রত্যাহার হয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে অদ্যাবধি সংযুক্ত রয়েছেন। ফেনী থেকে যাওয়ার আগে তিনি জেদ মিটাতে ৪ জন সাংবাদিককে জেলার বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলার চার্জশিটে যুক্ত করে দেন।
এসব মামলার এজাহারে তাদের কারোরই নাম ছিল না। পরবর্তী সময়ে সব কটি মামলায় তারা জামিন লাভ করে আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। ছাগলনাইয়া থানায় করা একটি মামলায় ভুলক্রমে হাজিরা দিতে না পারায় ইউসুফ আলীর জামিন বাতিল হয়।