প্রত্যেক ছবিতেই সাভারের আশুলিয়ায় ভয়াবহ তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের দুঃসহ স্মৃতি! ঘটনার এক দশক পর সেসব স্মৃতিরই প্রদর্শনী হলো আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টসের প্রধান ফটকে।
বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি সংগঠন।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টসেই ঘটেছিল ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ১১৭ জন গার্মেন্টসকর্মী নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছিলেন আরও দুই শতাধিক।
আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তাজরীন অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক শাহ আলমের মা সাহারা খাতুন, মাহফুজা আক্তারের স্বামী আব্দুল জব্বার, লিপি আক্তারের মা মোছা. নসীমন, মো. আয়নালের মা জবেদা বেগম, আহত শ্রমিক নাসিমা আক্তারসহ কয়েকজন শ্রমিক নেতা বক্তব্য দেন।
বক্তারা দাবি করেন, বছরের পর বছর পার হলেও মামলায় দীর্ঘসূত্রতা আর স্বজনপ্রীতির কারণে তারজীন গার্মেন্টসের অভিযুক্ত মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যদের বিচার হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ পুনর্বাসনসহ দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে ক্ষতিপূরণ আইন বদলেরও দাবি জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান শ্রমিক নেতা তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশের ৪০ লাখ শ্রমিকের প্রতিনিধি তাজরীনের শ্রমিকরাও। বাংলাদেশের নাম অন্য সব শ্রমিকের মতো তাজরীনের শ্রমিকরাও সারা দুনিয়ায় পরিচিত করেছিল। অথচ মালিক, সরকার আর বায়ারের অবহেলা আর অমনোযোগে প্রাণ হারায় তারা। বিচারহীনতার ১০ বছর বলে দেয় শ্রমিকের জীবন ও স্বপ্নের কোনো মূল্য নেই সরকারের কাছে। দোষীদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ আইনের বদল ও ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ পুনর্বাসন দাবি করছি আমরা।’
আয়োজকরা জানান, তাজরীন দিবসের ১০ বছর পূর্তিতে রাজধানীর পরীবাগে সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার তাজরীন ভবনের সামনে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) তাজরীনের সামনে নিহত শ্রমিকদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা নিবেদন’ কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়েছে।