মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যে গতিতে এগিয়েছিল, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের উন্নতির গতি আরও দ্রুত বলে দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। বলেছেন, নিন্দুকরা অনেক কথাই বলবে, কিন্তু বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যেতেই থাকবে।
বুধবার ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের লাইন মাটির নিচে নিয়ে যাওয়ার একটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয় সেখানে।
বাংলাদেশ-চীনের যৌথ অর্থায়নে ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে ধানমন্ডি এলাকার ২০ কিলোমিটার লাইন মাটির নিচে নিতে খরচ হবে ৫৩ মিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে মেয়র তাপস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছেন। ১৪ বছরের মধ্যে একটি দেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার নজির সারা বিশ্বে আর নেই। মালয়েশিয়া করেছে ২৫ বছরে, সিঙ্গাপুর করেছে ৩৫ বছরে।
‘সুতরাং যাদের সঙ্গে পার্থক্য দেখানো হয়, সেসব দেশের অনেক আগেই অনেক অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছেন।’
মেয়র বলেন, ‘নিন্দুকেরা নিন্দার কথা বলেই যাবে। যে যাই বলুক, যত রকম বিভ্রান্তি ছাড়ানোর চেষ্টা করুক জননেত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু তার লক্ষ্য থেকে একটুও সরে দাঁড়াননি। তাঁর লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করে চলেছেন।
‘নিন্দুকের নিন্দার মাঝেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। নিন্দুকের নিন্দার মাঝেই এমআরটির (মেট্রোরেল) কাজ গতিশীলভাবে চলছে। অচিরেই এমআরটি চালু হবে।
‘নিন্দুকের নিন্দার মাঝেই কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল শুরু হয়ে যাচ্ছে। নিন্দুকের নিন্দার মাঝেই আমরা ঢাকা শহরের এই তারের জঞ্জাল সরিয়ে ভূগর্ভস্থ তারের সংযোগে রূপান্তরিত করছি।
‘নিন্দুকেরা নিন্দা চালিয়ে যাবে। তারা যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় থেকে যাবে। পরবর্তী নির্বাচনেও নিন্দুকেরা নিন্দার জায়গায় থেকে যাবে। আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করে যাবেন। ঢাকা এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের লালিত সোনার বাংলা গড়ার দিকে বীরদর্পে এগিয়ে যাবে।’
ঢাকা শহরকেও ধীরে ধীরে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করার ঘোষণাও দেন মেয়র। বলেন, ‘ঢাকার সৌন্দর্য্য আমরা অনেকাংশেই উপলব্ধি করতে পারি না। কারণ, বিভিন্ন কারণে তা ঢাকা পড়ে যায়। সেই ঢাকা পড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি মূল উপাদান হলো তার।
‘শহরের উপর দিয়ে চলে যাওয়া বিদ্যুতের তার, অন্যান্য ইউটিলির তারের জঞ্জালের জন্য আমরা আমাদের সুন্দর ঢাকাকে উপভোগ করতে পারি না। কিন্তু আমরা যখন বহির্বিশ্বে যাই তখন বিমানবন্দর হতে বের হয়ে দেখি একটি খোলা জায়গা, স্বচ্ছ জায়গা, কোনো তারের জঞ্জাল নেই, চোখে কোনও বাধা নেই, তখন ওই শহরটিকে অনেক সুন্দর মনে হয়। একটা সুন্দর অনুভূতি উপলব্ধি হয়। আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা ঢাকা শহরের মাথার ওপরের তারের জঞ্জাল ভূগর্ভস্থে নিয়ে যেতে পারছি। তাই আজ আমরা আনন্দিত।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্দ শেষ হলে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদী ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। বলেন, ‘৫ ডলারের যে গ্যাসের মূল্য সেটা ৪০ ডলার এসে পৌঁছেছে। সারাবিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে টালমাটাল। ইউকে, জার্মানি প্রত্যেকেই স্ট্রাগল করছে। তাদের বিদ্যুৎ নিয়ে, জ্বালানি নিয়ে। আমরাও এই বৈশ্বিক অবস্থার বাইরে নই।’
ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ও ডিপিডিসি'র পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানও বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাফর আহমেদসহ করপোরেশন ও ডিপিডিসির বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।