বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভ্রমণের টাকা পেতে নানাকে হত্যা

  •    
  • ২৩ নভেম্বর, ২০২২ ১৬:০২

পুলিশ জানায়, ১৭ নভেম্বর রাতে চকবাজারের খাজে দেওয়ান রোডের ফার্স্ট লেনের ছয় তলা ভবনের দোতলায় ডাকাতির জন্য প্রবেশ করেন একদল তরুণ। হাজি মনসুর আহমেদ তখন বাসায় একা ছিলেন। বাকি সদস্যরা ছিলেন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। তরুণরা মনসুরকে অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দিতে গেলে তিনি বাধা দেন। আর তখনই মনসুরকে মারধর করেন তরুণরা, যাতে মৃত্যু হয় তার।

পুরান ঢাকার চকবাজারে হাজি মনসুর আহমেদ হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার নাতি-নাতনিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বাহিনীটির ভাষ্য, ঘুরতে যাওয়ার টাকার প্রয়োজনে দুই স্বজন অন্যদের নিয়ে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধকে হত্যা করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) বিপ্লব বিজয় তালুকদার বুধবার ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মনসুর আহমেদের মেয়ের দুই সন্তান আনিকা তাবাসসুম ও শাহাদাত মুবিন আলভী, তাবাসসুমের ছেলেবন্ধু রাজু, রাজুর ভাই রায়হান ও তাদের পরিচিত সাঈদ।

পুলিশ জানায়, ১৭ নভেম্বর রাতে চকবাজারের খাজে দেওয়ান রোডের ফার্স্ট লেনের ছয় তলা ভবনের দোতলায় ডাকাতির জন্য প্রবেশ করেন একদল তরুণ। হাজি মনসুর আহমেদ তখন বাসায় একা ছিলেন। বাকি সদস্যরা ছিলেন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে।

বাহিনীটি আরও জানায়, তরুণরা মনসুর আহমেদকে অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দিতে গেলে তিনি বাধা দেন। আর তখনই তাকে মারধর করেন তরুণরা। এতে মৃত্যু হয় মনসুরের।

পরে তরুণদের দলটি মনসুরের বাসা থেকে নিয়ে যায় ৯২ হাজার টাকা।

ঘটনার পর ১৯ নভেম্বর মনসুরের ছেলে আসগার আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় দস্যুতাসহ হত্যার মামলা করেন।

ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে মনসুর হত্যায় তার পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি।

ব্রিফিংয়ে কী জানাল পুলিশ

মনসুর হত্যায় তার নাতি-নাতনিদের জড়িত থাকা নিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে একটি সিরিঞ্জ পাওয়া যায়। এই সিরিঞ্জকে কেন্দ্র করে তদন্ত মোড় নেয়। শুরুতে আমরা দস্যুতাসহ খুনের মামলা নিলেও পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্যদের পরিকল্পনায় খুনের প্রমাণ পাই।’

তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনায় ভিকটিমের ছেলে-মেয়ে জড়িত। নাতনি আনিকা ন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজে পড়ে। তিনি মূল পরিকল্পনাকারী। তার ভাই, তার (আনিকা) ছেলেবন্ধু ও অন্যরা পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতি করতে গিয়েছিল।

‘ঘুরতে যাওয়ার জন্য টাকার প্রয়োজন ছিল। সেই টাকা জোগাড় করতেই ডাকাতির পরিকল্পনা করা হয়।’

হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এক মাস আগে পরিকল্পনা হয়। বাসা ফাঁকা থাকার সুযোগ খুঁজছিল তারা। আর এই সুযোগটি আসে ১৭ নভেম্বর রাতে। পরিবারের সদস্যরা চাঁন কমিউনিটি সেন্টারে বিয়েতে অংশ নিতে যায়। আনিকাও সেখানে যান।’

তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি সেন্টার থেকে তদারকি করেন তিনি (আনিকা)। আর বাড়ির আশপাশে থেকে আনিকার ছেলেবন্ধু রাজু ওয়াচার (প্রহরী) হিসেবে কাজ করে। ডাকাতি করতে বাসায় প্রবেশ করে আনিকার ভাই আলভী, রাজুর ভাই রায়হান এবং সাঈদ।

‘এই তিনজন ভুক্তভোগীকে ইনজেকশন দেয়ার চেষ্টা করে। এতে বাধা দেন ভুক্তভোগী। আর তখনই রায়হান এবং সাঈদ মনসুর আহমেদকে মারধর করে ঘরে থাকা টাকা লুট করে নিয়ে যায়। টাকাগুলো খুঁজে বের করে দেয় আলভী।’

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার জানান, ৯২ হাজার টাকা লুট হয়। এর মধ্যে ৬২ হাজার টাকা আনিকার বাসা থেকে উদ্ধার হয়।

তিনি বলেন, পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

মামলার এক তদন্ত কর্মকর্তা জানান, হত্যাকারীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ডাকাতি করা। আনিকা ও আলভী পরিবার থেকে হাতখরচ হিসেবে খুবই সামান্য টাকা পেতেন। ঘুরতে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত টাকা প্রয়োজন হয় বলে তারা ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। ঘটনাক্রমে হত্যার শিকার হন মনসুর আহমেদ।

পুলিশ জানায়, মনসুর আহমেদের স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বৃদ্ধের মেয়ের দুই সন্তান ডাকাতির পরিকল্পনায় জড়িত।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় আনিকা ও আলভী জড়িত থাকার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারলেও তা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, জড়িতদের ডিজিটাল ফরেনসিক, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের ভাষ্য, কার কী দায়, তা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার পাঁচজন।

এ বিভাগের আরো খবর