খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নে সারের ডিলারশিপ বরাদ্দে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।
ইউনিয়নের সার ও বীজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়া সত্ত্বেও অবৈধভাবে ২০ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ডিলারশিপ পেতে সহায়তা করছেন স্বয়ং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন তারা।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই ইউনিয়নে সারের ডিলার ছিলেন মেসার্স অনাবিল ট্রেডার্সের মালিক শাহিদা শারমিন। তিনি একই সঙ্গে মধুগ্রাম কলেজে শিক্ষকতা করেন। সম্প্রতি ওই কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ায় তিনি ডিলারশিপ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
পরে চলতি বছরের ৮ অক্টোবর ওই ইউনিয়নে নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপজেলা কৃষি অফিস। তখন ৫টি প্রতিষ্ঠান ডিলারশিপ নিতে আবেদন করে। ১৩ অক্টোবর উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় চারটি আবেদন বাতিল করা হয়। পুনরায় মেসার্স অনাবিল ট্রেডার্সকে ডিলারশিপ দেওয়ার জন্য রেজল্যুশন করা হয়।
রুদাঘরা ইউনিয়নে খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাকিব খান বলেন, ‘মেসার্স অনাবিল ট্রেডার্সের বর্তমান মালিক অনাবিল আজাদ। তিনি রঘুনাথপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। তা সত্ত্বেও রুদাঘরা ইউনিয়নের সারের ডিলারশিপ তাকে দেওয়া হচ্ছে। যা সরকারের নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্গন হচ্ছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিলারশিপ পেতে অনাবিল আজাদ যে আবেদন করেছিলেন, তাতে তিনি নিজেকে রুদাঘরা ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। এমনকি রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তিনি একটি প্রত্যায়নপত্রও নিয়েছেন। তবে বাস্তবে তিনি ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা নন। আর জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে রঘুনাথপুর ইউনিয়নের। এ ছাড়াও অনাবিল আজাদের বয়স মাত্র ২০ বছর। তিনি পেশায় একজন ছাত্রী। তবে এসব তথ্য যাছাই না করেই পুনরায় অনাবিল ট্রেডার্সকে ডিলারশিপ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন উপজেলা কৃষি অফিসার।
এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ‘রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নপত্র মোতাবেক তিনি নিজেকে স্থায়ী বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। এ ছাড়াও তার গোডাউনসহ অন্য তথ্য সঠিক থাকায় উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি তাকে ডিলারশিপ দেওয়ার জন্য রেজল্যুশন করেছে। ওই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তার স্বাক্ষরেই রেজল্যুশন হয়।’
রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমার এলাকায় যদি কেউ বসবাস শুরু করে তাকে আমি প্রত্যয়নপত্র দিতে পারি। এটা কোনো ব্যাপার না। বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার। কেউ এখানে বসবাস শুরু করলে প্রত্যয়নপত্র দেয়া যায়।’
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা না হলে তাকে কোনোভাবেই ডিলারশিপ দেওয়া যাবে না। উপজেলা থেকে যদি এমন রেজল্যুশন করে পাঠানো হয়ে থাকে, তবে নীতিমালা অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’