বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধানমন্ডির বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি

  •    
  • ২১ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৫১

হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। রায়ে একই সঙ্গে বাড়িটির মালিকানা দাবি করে রিট দায়ের করায় সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নম্বর রোডে অবস্থিত ৩০০ কোটি টাকা মূল্যমানের বাড়িটি সরকারের বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাড়িটির মালিকানা দাবি করে রিট দায়ের করায় সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পৃথকভাবে দায়ের করা দুটি রিট নিষ্পত্তি করে সোমবার এই রায় দেয় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই রায়ের ফলে ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

আদালতে আবেদ খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ড. কাজী আখতার হামিদ ও নকিব সাইফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আরেক দাবিদার এস. নেহাল আহমেদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাশিম।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর বাড়ির মালিকানা দাবি করে পৃথক দুটি রিট হয়। একটি রিট দায়ের করে সরকার। আরেকটি রিট দায়ের করেন সাংবাদিক আবেদ খান।

‘আদালত আজ (সোমবার) দুটির রিটের শুনানি শেষ করে রায় দিয়েছেন। রায়ে সরকারের দায়ের করা রিটটি আদালত যথাযথ ঘোষণা করেছে। এর ফলে বাড়িটি এখন সরকারের সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। আর আবেদ খানের দায়ের করা রিটটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তথ্য গোপন করে রিট দায়ের করায় তাকে প্রতীকী হিসেবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ধানমন্ডির আলোচিত ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৭২ সালে তৎকালীন মালিক পরিত্যাগ করে চলে যাওয়ায় সরকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।

পরবর্তী সময়ে তোহা খান, আবেদ খান ও অন্যরা ‌ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে ১৯৮৯ সালে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে মামলা করেন।

ওই মামলায় সাক্ষ্য এবং পক্ষদ্বয়ের কাগজপত্র ও সরকারি নিবন্ধক দপ্তরের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে বর্ণিত সম্পত্তি সরকার আইনসংগতভাবেই পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে মর্মে রায় দেয়া হয়।

এই রায় বহাল থাকা অবস্থায় এস. নেহাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ১৯৮৭ সালের আবেদন দেখিয়ে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে ১৯৯৬ সালে মামলা করেন। এই মামলায় তখন সরকার পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি। প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দেননি, বা সমর্থনীয় ও আবশ্যকীয় কাগজপত্র দাখিল করা না হলেও এস. নেহাল আহমেদ দাবিকারী ব্যক্তির পক্ষে রায় দেয়া হয়।

এই রায় বাস্তবায়নে এস. নেহাল আহমেদ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এই মামলাগুলোতে সরকার পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্বক প্রকৃত তথ্য-উপাত্ত দাখিল না করায় হাইকোর্ট পুনরায় এস. নেহাল আহমেদের পক্ষে রায় দেয়।

রায়ের বিরুদ্ধে দেরিতে আপিল করায় আদালত আপিল তামাদি ঘোষণা করে সে আবেদন খারিজ করে দেয়। এর দীর্ঘদিন পরে পুরো বিষয়টি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে ২০১৮ সালে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টের ১৯৯৭ সালের রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে সরকার পক্ষ। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত সরকারের পক্ষে রুল জারি করে। ওই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত সোমবার এই রায় দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আমরা আদালতে বলেছি যে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টের ১৯৯৭ সালের রায়টি প্রতারণামূলকভাবে ১৯৯৬ সালে তামাদির মেয়াদকে পাশ কাটানোর জন্য ১৯৮৭ সালে দায়ের দেখিয়ে লাভ করেছেন। এরূপ প্রতারনার কারণে ও মালিকানার সপক্ষে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ দাখিল না করায় ওই রায়টি বাতিলযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘মালিকানা দাবিকারী এস. নেহাল আহমেদ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন বা বাংলাদেশে অবস্থান করেন এরূপ কোনো দালিলিক প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। আবার বর্তমানে দাখিল করা এস. নেহাল আহমেদের জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্ণিত নামের বানান, বাবার নামের বানান ও বয়সের সঙ্গে বর্ণিত সম্পত্তি পরিত্যাগকারী এস. নেহাল আহমেদের নামের যথেষ্ট অসংগতি রয়েছে। এ কারণে এস. নেহাল আহমেদের পক্ষের রায় বাতিলযোগ্য।’

ডিএজি কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, ‘একই সম্পত্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও সমর্থনীয় কাগজপত্র ছাড়াই সাংবাদিক আবেদ খান তাদের বিরুদ্ধে সেটেলমেন্ট কোর্টের রায় গোপন করে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে রিট করায় আদালত তার রিটটি খারিজ করে দেয়।’

এ বিভাগের আরো খবর