ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ে নেতৃত্বদানকারীর পরিচয় পেয়েছে সিটিটিসি। আদালত চত্বরে এই ছিনতাই অভিযানে থাকা আরও বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছে তারা। সোমবার সন্ধ্যায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এই তথ্য জানিয়েছেন।
দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার অগ্রগতি জানতে চাইলে সিটিটিসিপ্রধান বলেন, ‘আমরা এখনই কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারছি না। এই ছিনিয়ে নেয়ার অপারেশনে যে নেতৃত্ব দিয়েছে, তার নাম আমরা পেয়েছি। তার সঙ্গে যারা সহযোগী ছিল, তাদের বেশ কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি।
‘আমাদের অপারেশনের স্বার্থে নামগুলো প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। এই পরিকল্পনা কীভাবে হয়েছে, তা আমরা অবগত হয়েছি। আমাদের বাকি কাজটি হলো যাদের শনাক্ত করেছি তাদের গ্রেপ্তার করা। আরও কোনো অগ্রগতি থাকলে আমরা জানাব।’
পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিটিটিসিপ্রধান বলেন, ‘ওদের গ্রেপ্তার করতে পারলে বিস্তারিত জানা যাবে। তারা চারজনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। দুইজনকে নিতে পারে নাই, দুইজনকে নিয়ে গেছে। প্রথমে যেহেতু চারজন নেমেছে, এই চারজনকেই তারা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। একসঙ্গে যদি আরও বেশি নামত, তাহলে তাদেরও হয়তো নিয়ে যেত। পরিকল্পনা হয়তো ছিল কিন্তু আমরা কনফার্ম না।
‘অপারেশনাল পার্টে যারা ছিল, তাদের জবানবন্দি পেলে, গ্রেপ্তার করতে পারলে বিস্তারিত জানাতে পারব। হয়তো আরও বড় কিছু থাকলেও থাকতে পারত। কেননা যারা হাজিরা দিতে এসেছিল, তারা প্রত্যেকে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। তারা সামরিক শাখা যেটাকে ওরা বলে আসকারি বিভাগের, এর সদস্য তারা।
‘প্রত্যেক সদস্যই তাদের কাছে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সকল সদস্যকেই ২০১৬ সালে সিটিটিসি গ্রেপ্তার করেছিলাম। তাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে অনেকগুলো অপারেশন ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছিল। তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করা আমাদের কাছে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’
অপারেশনে কতজন অংশ নিয়েছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০-১২ জনের কম না। সবাই আনসার আল ইসলামের সদস্য।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সোমবার সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফ করেন সিটিটিসিপ্রধান মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা
রেড অ্যালার্ট বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রেড অ্যালার্ট বলে কিছু নাই। আমরা সব সময়ই সতর্ক। আমরা প্রত্যেকটা পয়েন্টে সতর্ক করে দিয়েছি। তারা যেন সীমান্ত পার না হতে পারে, অন্য কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে না পারে, সেই সকল ব্যবস্থাই আমাদের পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে নেয়া হয়েছে।
‘আমাদের ইন্সপেক্টর জেনারেল গতকাল একটি ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। আমাদের নিরাপত্তার ফাঁক গলে তারা যাতে কোনোভাবে চলে যেতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
এই অভিযানে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই অভিযানে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনাদের আগেও বলেছি, আনসার আল ইসলাম, জেএমবি এবং হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ে লোক নিয়ে একটি নতুন সংগঠন তৈরি হয়েছে। আনসার আল ইসলামের সঙ্গে এই নতুন সংগঠনের যোগসূত্র পেয়েছি। বাট কালকের অপারেশনে তাদের কোনো হাত নেই।’