বিদেশে অর্থ পাচার, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ চার মামলায় দণ্ডিত তারেক রহমানকে দেশে ফিরে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার পরিবেশ তৈরির আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে বিএনপি। নেতা-কর্মীদের সেই দায়িত্ব নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
প্রবাসী নেতার ৫৮তম জন্মদিন উদযাপনে রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে এ কথা বলেন মোশাররফ।
দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপি নেতা বলেছেন, ‘আজকে আমাদের সকলকে শপথ গ্রহণ করতে হবে এ দেশের গণতন্ত্র পূর্ণ উদ্ধার, খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরে এসে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সেই দায়িত্ব বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলকে নিতে হবে।’
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার পরের বছর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে যান। সরকার তাকে দেশে ফেরাতে উদগ্রীব এ কারণে যে, তিনি যেসব মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন, তার মধ্যে আছে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা।
এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও বিদেশে অর্থ পাচার মামলায় তার সাত বছরের জেল ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের জেল ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির এক মামলায় তার দুই বছরের দণ্ড হয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে অবস্থান করায় কোনো দণ্ড কার্যকর করা যাচ্ছে না।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে কারাগারে যাওয়ার দিন তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি। দলটি এখন যে কর্মসূচি পালন করছে, তারেকই যুক্তরাজ্য থেকে তা সমন্বয় করছেন। তার বক্তব্য প্রচারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সমাবেশে তিনি বক্তব্য রাখছেন ভার্চ্যুয়ালি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ফরমায়েশি রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তারেক রহমানকে বিদেশে থাকতে হচ্ছে। তার অনুপস্থিতিতে এই জন্মদিন পালন করছি। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখেন এবং দীর্ঘায়ু দান করেন। জনগণের যে প্রত্যাশা সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশে সঠিক রাজনীতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।’
বিএনপি নেতা আশাবাদী তারা সব রাজনৈতিক দলগুলোকে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক করে তাদের লক্ষ্য স্থানে পৌঁছতে পারব। তিনি বলেন, ‘এ সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু দেশের কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে জনগণের সমর্থন তা প্রমাণ করে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঞা, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিবন-উন-নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।