প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ১০ লাখ লোকের সংকুলান হবে না। সেক্ষেত্রে তারা কীভাবে সেখানে সমাবেশ করবে? যেখানে তারা সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগমের ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে পল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চায় কীভাবে?
শনিবার আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় সংগঠনের সভাপতি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যদি ১০ লাখ লোকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে তাহলে এমন কোনো জায়গায় সমাবেশের অনুমতি চাক, যেখানে এতো পরিমাণ লোক ধরবে।
বিএনপির এই সমাবেশ ও আন্দোলনের কর্মসূচিকে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচকভাবে দেখছেন বলে সূত্র দাবি করে।
সূত্রমতে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। বিরোধী দলের মিছিল-মিটিং করার পূর্ণ অধিকার আছে। তবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাবধান থাকতে হবে যাতে তারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য না করতে পারে। কেননা দলটির অতীত ইতিহাস সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ আর মানুষ হত্যার।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন, গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নসহ নানা ইস্যুতে উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি দল এবং সরকারের নানা ইস্যুতেও উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।
আলোচনায় গুরুত্ব পায় দ্রব্যমূল্য ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। বৈঠকে উপস্থিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা যেকোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্য কমানোর পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছেন। তবে বৈশ্বিক সংকটের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
তখন উপদেষ্টারা বলেন, এই বাস্তবতার পাশাপাশি দেশের অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিও দ্রব্যমূল্যের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। কেননা তারা দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের পর্যায়ে প্রভাব পড়ার আগেই দাম বাড়িয়ে দেয়, আর কমানোর ক্ষেত্রে গড়িমসি করে।
বৈঠকে উপস্থিত পেশায় অর্থনীতিবিদ একজন উপদেষ্টা নিউজবাংলাকে জানান, প্রধানমন্ত্রী সত্যিকার অর্থেই রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেননা রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে গেছে। আগামীতে রেমিট্যান্স কমার ধারা অব্যাহত থাকলে সমস্যা হবে। রেমিট্যান্স কমার ক্ষেত্রে হুন্ডিতে অর্থ আসার বিষয়টি এ সময় তিনি উল্লেখ করেন।
তবে প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টাদের এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, এখন যে পরিমাণ রিজার্ভ আছে তাতে চিন্তার কিছু নেই। এমনকি রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামলেও সেটা তিন মাসের ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে হবে। আমদানি কমাতে হবে। আর রপ্তানি বাড়াতে হবে।