আলিনা ইসলাম আয়াত। বয়স ৫ ছুঁই ছুঁই। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। ৫ বছরে টানা ৫ ঘণ্টার জন্য মায়ের চোখের আড়াল না হলেও গত তিনদিন ধরে নিখোঁজ সে!
স্বভাবজাত দুষ্টুমি আর প্রাণচাঞ্চল্যে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখা আয়াতের খোঁজে এখন পাগলপ্রায় তার বাবা-মা ও স্বজনরা।
তারা জানান, গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন বাসা থেকে পাশের মসজিদে আরবি পড়তে গিয়েছিল আয়াত। এরপর থেকেই নিখোঁজ সে।
ওইদিন বাসা থেকে বের হওয়ার এক ঘণ্টা পর ওই মসজিদে গিয়ে আয়াতকে খুঁজে পাননি স্বজনরা। পরে তারা জানতে পারেন, সেদিন আরবি পড়তে মসজিদেই যায়নি আয়াত। এ ঘটনায় পরদিন তার বাবা ইপিজেড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
আয়াতের বাবা মো. সোহেল রানা বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে মক্তবের উদ্দেশে বের হয় আয়াত। এর এক ঘণ্টা পর আমার বাবা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে আয়াতকে না দেখে তার মাকে জানান। পরে বাসার সামনের একটি ভবনের সিড়ির নিচে তার কায়দা (আরবি বর্ণমালা শিক্ষার বই) পাওয়া যায়। এখন তিনদিন পার হয়ে গেলেও কেউ তার খোঁজ দিতে পারেনি। কারও সঙ্গে আমাদের শত্রুতা বা ঝগড়া-বিবাদও নেই যে তাকে কিডন্যাপ করবে।’
মা তামান্না বলেন, ‘আমি আমার শ্বশুরের ফোন পেয়েই বের হয়ে আশেপাশে খুঁজতে থাকি, কিন্তু কোথাও পাইনি। পরে আসমা নামের ছোট্ট একটি মেয়ে আমাকে বললো, একটা ভাইয়া কোলে করে আয়াতকে নিয়ে গেছে!’
ইপিজেড থানায় নিখোঁজ ডায়েরির পর থেকে আয়াতকে উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করছে এই বাহিনী।
ইপিজেড থানার ওসি আব্দুল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্ত করা হচ্ছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কিডন্যাপ বলে মনে হচ্ছে না। তারপরও আমরা দেখছি, ঘটনাটা কী আসলে।’
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর চিপস কিনতে বের হয়ে নগরীর জামালখান এলাকায়ও নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী মার্জনা হক বর্ষা নামে আরেক শিশু। এর তিনদিন পর একই এলাকার একটি নালা থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে পরে লক্ষ্মণ দাস নামে এক দোকান কর্মচারীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।