বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছে: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ১২:৩৯

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যতটুকু স্বচ্ছতা এসেছে, তা আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল। বিএনপি-জামায়াত সরকারে থাকতে ভোটচুরির সব আয়োজন সম্পন্ন করেছিল; ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল দেশে গণতন্ত্র সুসংহত করেছে।

তিনি বলেছেন, বিএনপির শাসনামল ছিল সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, মানি লন্ডারিং, খুন আর ভোটচুরির।

গণভবনে শনিবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এসব কথা বলেন দলটির সভাপতি। সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।

এতে নির্বাচন নিয়ে বিরোধী পক্ষের অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যতটুকু স্বচ্ছতা এসেছে, তা আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপির শাসনামল ছিল দুর্নীতি আর সন্ত্রাসের রাজত্ব। তারা জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল বলেই তা দেশব্যাপী বিস্তার লাভ করেছিল। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও কোকো সবাই মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত। আমরা কোকোর পাচার করা টাকা ফিরিয়ে এনেছি। দেশে এতিমদের জন্য টাকা এসেছে। খালেদা জিয়া নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে আত্মসাৎ করেছেন।

‘এক-এগারোর সরকার এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, যে মামলায় তার সাজা হয়েছে। তারেক রহমান রাজনীতি করবে না মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে গেছে। তিনিও আদালতের রায়ে দণ্ডিত। এদের হাতে দেশ কীভাবে নিরাপদ থাকবে?’

তিনি বলেন, ‘গুম, খুন, হত্যার রাজনীতিতে তারা (বিএনপি) বিশ্বাস করে। তাদের আমলে আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

‘সে সময় মানুষের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল; আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। হাওয়া ভবনের পাওনা না দিলে ব্যবসা করার সুযোগ ছিল না।’

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের কর্মসূচি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৫০ লাখ মানুষকে বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছি। নিম্ন আয়ের মানুষকে ১৫ টাকায় দিচ্ছি। আর এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড (ফ্যামিলি কার্ড) করে দিচ্ছি, যা দিয়ে ভর্তুকি মূল্যে তারা চাল, ডাল, তেল, চিনি কিনতে পারছে। কিছু লোককে ঘর করে দিয়েছি; আরও দেব।

‘আমাদের টার্গেট এ দেশে একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। উপকূল ও বন্যাদুর্গত এলাকার জন্যও বিশেষ ঘর করে দিচ্ছি। বিনা পয়সায় বই দিই; বৃত্তি দিচ্ছি। কৃষকদের কৃষি উপকরণ দিচ্ছি। করোনায় শ্রমিকদের প্রণোদনা দিয়েছি। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা পাঠিয়েছি।

‘‌মানুষের কল্যাণে এত কাজ এর আগে কোনো সরকার করেনি। আমাদের আগে তো এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। শুধু আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। এখন তো কেউ বাংলাদেশকে ছোট চোখে দেখে না; দেখতে পারে না। আমরা বিজয়ী জাতি; সারা বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।’

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট আগামী মাসে কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয় সারা বিশ্বই করছে; আমরাও করেছি। হয়তো একটু কষ্ট হয়েছে। আগামী মাস থেকে হয়তো এই কষ্ট আর থাকবে না। তারপরও আমি বলব, তেল পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে।

‘মিতব্যয়ী হতে হবে। নিজের জমিটুকু কাজে লাগান। ছাদবাগানসহ নানাভাবে উৎপাদন করেন। নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে পারলে ওই দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না।’

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের আমলের তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তারা রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল মাত্র দুই দশমিক নয় বিলিয়ন ইউএস ডলার, যেটাতে তিন মাসের খাবার বা আমদানি করার পয়সা হতো না। সে অবস্থা আমরা ক্ষমতায় এসে (১৯৯৬) রিজার্ভ বাড়িয়েছি। ২০০৮-এ যখন আসি, তখন পাঁচ বিলিয়নের বেশি ছিল না। সেখান থেকেও ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত তুলতে সক্ষম হয়েছিলাম।

‘তা ছাড়া আমাদের যে লোন, আমরা কখনও ঋণখেলাপি হব না। তিন মাসের আমদানি খরচ হাতে রেখেই আমরা অন্য কাজ করেছি। রিজার্ভ নিয়ে তো খুব আলোচনা, আমরা কী করেছি? আমাদের জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে। তেল, গম, ভুট্টা, খাদ্যশস্য কিনেছি। করোনার টিকা স্পেশাল বিমান পাঠিয়ে কিনে এনেছি।

‘চিকিৎসায় হাসপাতাল ডেডিকেটেড করেছি। বিনা পয়সায় চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবার থেকে আলাদা করে বাসা ভাড়া করে রেখেছি, যেন তারাও অসুস্থ না হয়, পরিবারও আক্রান্ত না হয়। ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়ায় তাদের আলাদা করে একটা ভাতা দিয়েছি।’

যারা বিনা পয়সায় টিকা নিয়েছেন, চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের উত্থাপিত প্রশ্ন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি। করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রণোদনা দিয়েছি। অভাবীদের খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি। অতিমারির সময় আমদানি বন্ধ থাকায় পরে কাঁচামাল কিনতে হয়েছে। এগুলো আমাদের রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হয়েছে।’

অবকাঠামো নির্মাণ খরচ নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের এ দেশের মাটির সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এদের মাটির চরিত্র বোঝে না, তারা খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলবেই। আমাদের এখানে রাস্তাঘাট-কালভার্ট নির্মাণ করতে গেলে আগে মাটি শক্ত করে নিতে হয়। এখানে নরম মাটি। তাই খরচ তুলনামূলক বেশি হয়।’

খেদ প্রকাশ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘নানা সমালোচনা শুনতে হয়। এত কষ্ট করে দিন-রাত এত পরিশ্রম করে বাংলাদেশকে এই অবস্থানে নিয়ে আসছি। বাইরের লোকেরা দেখে, আমাদের দেশের লোকেরা দেখে না; কষ্ট লাগে।’

বিএনপির গণতন্ত্রের আন্দোলনের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির আমলে কী হতো, তার জন্য বেশি দূর যেতে হবে না। ২০০১ সালে নির্বাচন, মাগুরার নির্বাচন, মিরপুর-১০ নির্বাচনগুলো স্মরণ করলে হবে। কথা ছিল ১০ হোন্ডা, ২০ গুন্ডার নির্বাচন।

‘ভোটের সিলমারা থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম হতো, যার জন্য আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট করেছিল ২০০৬ সালে। সেই তারা নাকি এখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে!’

এ বিভাগের আরো খবর