সিরাজগঞ্জে এলজিইডির রাস্তা ভেঙে বাড়ির প্রাচীর নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের সীমানার শেষ প্রান্তে খামার পাইকোশা গ্রামে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জনসাধারণের হস্তক্ষেপে আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখলেও বাড়ির মালিক ইউসুফ আলী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুরছেন তার প্রাচীর নির্মাণ শেষ করার জন্য।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাইকোশা গ্রামে জনসাধারণের চলাচলের জন্য এলজিইডির রাস্তা ভেঙে ইউসুফ আলী তার বাড়ির প্রাচীর তৈরির কাজ করছেন।
রাস্তার বাঁকের অংশ থেকে প্রায় ৩ হাত ও বাঁকের আরেক অংশ থেকে প্রায় দুই হাত পিচঢালা রাস্তার ওপরে তার প্রাচীরের কলাম তৈরি করেছেন তিনি। এ ছাড়া দুটি কলামের মাঝে ঢালাইও করছেন।
রাস্তাটি জনসাধারণের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাঁকটিও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই ইউসুফ আলী তার বাড়ির সামনে নির্মাণকাজ করে আসছিলেন। এখন তার সামনে দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেছেন।
শিয়ালকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আজম তালুকদার বলেন, ‘সরকারি রাস্তা ভেঙে বাড়ি নির্মাণ এটা কেমন কথা। স্থানীয়দের সঙ্গে সেখানে গিয়ে প্রাচীর নির্মাণকাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সরকার কি একটি রাস্তার জন্য বারবার অর্থ খরচ করবে?’
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, এই রাস্তাটি শিয়ালকোল বাজার ও পাইকোশা বাজার ও মহাসড়কে ওঠার একমাত্র পথ। ইউসুফ আলী ধনাঢ্য হওয়ার কারণে তার কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই।
এদিকে বাড়ির মালিক ইউসুফ আলীর বাসায় গেলে তিনি দেখা না করে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজেই যোগাযোগ করবেন বলে জানান।
ইউসুফ আলীর অফিসের সহকারী মোকলেসুর রহমান বলেন, ‘ভৌগোলিক কারণে এটি কামারখন্দ উপজেলায় পড়েছে। আমরা সেখানকার স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে এলজিইডির রাস্তা ভেঙে কাজটি করা ঠিক হয়নি। আমরা আলোচনা করছি এলজিইডির সঙ্গে, যাতে রাস্তা একটু সরিয়ে দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করতে পারি।’
এ ব্যাপারে শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা জানান, ‘স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। প্রাচীরটি সড়কের মধ্যে করা হচ্ছে। তাই প্রাথমিকভাবে কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করে কারো কোনো কাজ করার অধিকার নেই।’
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তা ভেঙে প্রাচীর নির্মাণ আইনত অপরাধ। বিষয়টি সম্পর্কে আমি খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব। যদি এ ধরনের কাজ তিনি করে থাকেন, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’