সরকারকে ফোরটুয়েন্টি ও মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। বলেছেন, ‘মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায়।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাতটি রাজনৈতিক দলের জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আয়োজিত সমাবেশে সমাবেশে এসব কথা বলেন মান্না।
তিনি বলেন, ‘দেশে বড় সংকটে আমরা নারায়ণগঞ্জে এসে দাঁড়িয়েছি। সরকার গতকাল তেল চিনি ওএমএস এর আটার দাম বাড়িয়েছে। এর আগেও পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এখন মানুষ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে অর্ধেক ব্যাগ ভরে বাড়ি ফিরে যায়। মানুষ মাছ মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার কথা বলেছিলেন। এই সরকার ফোরটুয়েন্টি, মিথ্যুক সরকার। জনগণকে ভাওতা দিয়ে ক্ষমতায় আছে।’
সরকারের সমালোচনা করে মান্না আরও বলেন, ‘আমরা দুই মাস আগে বলেছিলাম দেশে শ্রীলঙ্কা সিনড্রোম দেখা দিচ্ছে। এখন দোকানে গেলে কাগজ, কালি, কলম পাওয়া যায় না। দোকানে গেলে জিনিসপত্রের এতো দাম মনে হয়, আগুন লেগে আছে। মানুষ কোনো জিনিস কিনে আরাম পাচ্ছে না। তাই মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা সরকারের পরির্তন চায়।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষ। তার মধ্যে ৮ কোটি মানুষই গরিব, ২ কোটি শিক্ষিত যুবক বেকার, আড়াই কোটি মানুষ করোনায় গরিব হয়েছে। দেশের ২০টি ব্যাংকের কাছে একটি ডলারও নেই। এটি কোনো দেশ হলো? তার চেয়ে ভাল ভিক্ষা করা। যারা ভিক্ষা করে চলে তারাও বলতে পারে আমি তো একশ টাকা কামাই করি। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো কামাই নাই। বাংলাদেশে শুধু চুরি, পাচার, ক্ষমতার দাপট, অহঙ্কার, সমস্ত মানুষকে অবজ্ঞা করা। এই পুরো ব্যবস্থা বদলাতে জনগণ সকারের পরিবর্তন চায়।
‘যদি আমরা ক্ষমতায় যাই, তাহলে আমাদের দেশে গরিব মানুষ যারা আছে তাদের প্রত্যেককে মাসে এক হাজার করে টাকা দিবো।
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে মান্না বলেন, সারা দেশের বিএনপির সামাবেশে মানুষ নানাভাবে ছুটে গেছে। তাদের সমাবেশের আগে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ করা হলো। তবুও মানুষ গেছে। বিএনপির সমাবেশে মানুষ তিনদিন আগে থেকে নদী সাঁতরে ভেলায় করে গেছে। এই রকম কি আগে দেখেছেন? ঢাকায়ও মানুষকে আটকে রাখা যাবে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে মান্না বলেন, “এইযে ‘খেলা হবে’ নিযে এতো কথা হলো, এই শব্দটা কিন্তু আমাদের রাজনীতিতে অনেক ব্যবহৃত হয়। এই খেলার কথা বলে ক্ষমতাসীনরা মনে করে, গায়ের জোর ছাড়া ক্ষমতায় থাকার আর কোনো পথ নাই।”
সামবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বিদেশিরা এখন তাদের সাথে নেই। এ কারণে এখন সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। এখন তারা ভয়ে আছে। কখন ক্ষমতা ছাড়তে হয়।’
সরকারের নানা সমালোচনা করে সাকি বলেন, ‘আমরা সরকারের পদত্যাগ চাই। কোনো রকমের ভুল-ভ্রান্তি চলবে না। জনগন যদি চায় তাহলে কারো শক্তি নাই অবৈধভাবে নির্বাচন করার।’
গণতন্ত্র মঞ্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আয়োজনে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী, হাসনাত কাউয়ুম।