সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও উষ্ণ করতে বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ৩২ বিধায়ক। স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারির নেতৃত্ব শনিবার দলটি ঢাকায় পৌঁছাবে। বিরোধীদলীয় নেতা দেবব্রত সাইকিয়াও প্রতিনিধিদলে আছেন। একটি সাংস্কৃতিক দল ও সাংবাদিকসহ মোট ৬২ জন আছেন এই দলে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি ও ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু যাদুঘর পরিদর্শন করার কথা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির।
বিধায়ক প্রতিনিধিদলে একটি সাংস্কৃতিক দলও থাকবে। তারা বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। রাঙামাটির অসমিয়া গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর সাংস্কৃতিক দলটি যাবে খাগড়াছড়ি। সেখানে তারা বোড়ো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। সফর শেষে আগামী ২২ নভেম্বর প্রতিনিধিদলটি ঢাকা ছাড়বে।
বাংলাদেশ সফর ঘিরে প্রতিনিধি দলটি ইতোমধ্যে প্রতিবেশি রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার অবস্থান নিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে রোববার বৈঠকের কথা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির। পরদিন সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তারা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সীর সঙ্গেও প্রতিনিধিদলটির বৈঠকের কথা রয়েছে।
এসব বৈঠকে আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বেকার সমস্যা, সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। পরে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের কয়েকটি শিল্পকারখানা ঘুরে দেখবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের সম্মানে নৈশভোজও দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ চলছে। সেখানকার বিধানসভার প্রতিনিধিদলের এই সফরের মধ্য দিয়ে আসামের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। আর এতে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই লাভবান হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লি সফরের সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। এখন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীদের ঢাকা সফর না হলেও, সিলেট-শিলচর উৎসব এবং আসাম বিধানসভার ৩৭ বিধায়কের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের মধ্যে রয়েছে- আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশ। এর মধ্যে আসাম, মেঘালয়ের সঙ্গে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বড় সীমান্ত রয়েছে।
১৯৪৭ সালের আগে আসাম-সিলেট একসঙ্গেই ছিল। দেশভাগের পর শহর দুটি আলাদা হয়ে যায়। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সরকার এই শহর দুটির মধ্যে নতুন করে সংযোগ বাড়ানোসহ ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছেন।