বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রওশন-কাদের বিরোধে রংপুরে মনোনয়ন জটিলতা

  •    
  • ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ২১:১৯

দলের রওশনপন্থিরা বলছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় জি এম কাদেরের দেয়া মনোনয়ন অবৈধ হবে। আর কাদেরপন্থিরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে মনোনয়ন দেয়ায় মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মনোনয়ন নিয়ে কোনো সংকট নেই।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রমের ওপর আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় রংপুর সিটি নির্বাচনে দলটির ‘মেয়র পদে’ দলীয় প্রার্থী নিয়ে নতুন আলোচনা তৈরি হয়েছে।

দলের রওশনপন্থিরা বলছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় জি এম কাদেরের দেয়া মনোনয়ন অবৈধ হবে। আর কাদেরপন্থিরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে মনোনয়ন দেয়ায় মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মনোনয়ন বৈধ হবে।

সিটি ভোটে জাতীয় পার্টির ‘বৈধ-অবৈধ’ শব্দের খেলা এখন রংপুরজুড়ে।

এ দিকে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মনোনয়নপত্রে দেখা গেছে, দলের পক্ষে মহাসচিব মো. মুজিবুর রহমান চুন্নু স্বাক্ষর করেছেন।

গত ১৩ নভেম্বর চুন্নুর স্বাক্ষর করা দলীয় মনোনয়ন মোস্তফার পক্ষে সংগ্রহ করেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম ইয়াসির। দলীয় প্রার্থী হিসেবে ১৫ নভেম্বর রংপুর রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন তিনি।

দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু নিউজবাংলাকে বলছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা মহাসচিব বা তাদের মনোনীত ব্যক্তি দলীয় মনোনয়ন দিতে পারেন। সে অনুযায়ী মোস্তফাকে আমি মনোনয়ন দিয়েছি। তাতে আইনি কোনো বাধা নেই।’

প্রতীক বরাদ্দ পাওয়া নিয়েও সমস্যা নেই জানিয়ে চুন্নু বলেন, ‘এর আগের নির্বাচনও দলীয় প্রার্থীকে আমরা সেভাবে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছি।’

এ দিকে, গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হক জি এম কাদেরের দলীয় ও রাজনৈতিক কার্মকাণ্ডের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আর ১৬ নভেম্বর শুনানির দিনে আগের আদেশ বহাল রাখেন আদালত।

জি এম কাদেরের আইনজীবী কলিমুল্লাহ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জি এম কাদেরের রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রমের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে আদালতে করা আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। তবে গত ৮ নভেম্বর আমরা এই মামলার আরজি খারিজের আবেদন করেছি। সেটার ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আগামী ৩০ নভেম্বর।’

রওশনপন্থি জাপা নেতারা বলছেন, আদালত থেকে দলীয় ও রাজনৈতি কার্যক্রমে জি এম কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। সে কারণে তিনি সিটি নির্বাচনে মোস্তফাকে দলীয় মনোনয়ন দিলেও সেটি অবৈধ হবে। তাই রওশন এরশাদ দেশে ফিরলে নতুন প্রার্থী দেয়া হবে।

দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে রংপুর সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী থাকবে কিনা, দলের দুইজন প্রার্থী হলে বৈধ হবে কিনা, ক্ষুব্ধ কোনো প্রার্থী উচ্চ আদালতের দারস্থ হলে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট হবে কিনা এসব বহুমাত্রিক আলোচনা চলছে রংপুর জুড়ে।

জাপার এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করে নিউজবাংলাকে বলেন, আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা আসার পর বিষয়টি আরও বেশি জটিল হয়েছে। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের হলেও প্রতীক বরাদ্দ আছে রওশন এরশাদের নামে। মোস্তফাকে লাঙ্গল প্রতীক পেতে হলে রওশন এরশাদের অনুমোদন ও অনুমতি থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আদালত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতে জি এম কাদের দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু রংপুর সিটি ভোটে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর আর কাদের উপর নিষেধাজ্ঞা খারিজ করতে আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে ৩০ নভেম্বর। অঙ্কটা একটু কঠিন। কীভাবে সহজ হবে তা বলা মুশকিল।

রওশনপন্থি নেতা ও জাপার সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার কেবল চেয়ারম্যানের। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞায় তিনি সমর্থন দিতে পারলেও মনোনয়ন দিতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘রওশন এরশাদ রোববার দেশে আসবেন। আমার সঙ্গে কথা হয়েছে, রংপুর সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নতুন ক্যান্ডিডেট দিচ্ছি। মোস্তফা রওশন এরশাদের সঙ্গে নাই, জি এম কাদেরের সঙ্গে আছেন। তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ভোট করতে হবে, অন্য কোনো উপায় নেই।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল হওয়ার পর নির্বাচনের একটি প্রজ্ঞাপন হয়, সেই প্রজ্ঞাপনে কারা কারা মনোনয়ন দিতে পারবেন সেটা স্পষ্ট লেখা আছে। আর মহাসচিবের উপর তো নিষেধাজ্ঞা দেয়া নাই। তা ছাড়া মনোনয়নের ক্ষমতাবান লোক কে হবেন, সেটা উনি (জি এম কাদের) সাত দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন জমা দিয়েছেন। যেহেতু দলের গঠনতন্ত্রে বলা আছে মহাসচিব মনোনয়ন দিতে পারবেন, তাই এ নিয়ে নতুন করে ভাববার কিছু নাই।’

তিনি বলেন, প্রতীক কারও ব্যক্তিগত নামে না, পার্টির নামে।

এ দিকে, জাতীয় পার্টির একক আধিপত্যের ভূমিতে দুই পক্ষে দৃশ্যমান বিরোধে দলীয় প্রার্থী নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। মোস্তফাকে ঠেকিয়ে ভোটের মাঠ দখলের পুরেনো চেষ্টা তাদের। সেই চেষ্টার সফল সমাপ্তি ঘটাতে চায় দলটি।

রংপুর সিটি ভোটের জন্য আগামী ২০ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বিরতরণ ও জমা নেবে দলের হাইকমান্ড। আর সিদ্ধান্ত আসবে ২৭ নভেম্বর।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘জাতীয় পার্টির এটা পুরনো খেলা। সেটা আমরা দেখছি না। আওয়ামী লীগ এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে গোছানো এবং শক্তিশালী অবস্থানে আছে। নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে মানুষ মুখিয়ে আছে। এবার নৌকার বিজয় হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর