সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ছোটো ছোটো ক্যাম্প তৈরি করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিভাগীয় সমাবেশের জন্য নির্ধারিত মূল মঞ্চের ডান পাশে পর্দা দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর। এগুলোর উপরে ব্যানারে লেখা- ‘ক্যাম্প’।
ক্যাম্পের ভেতরে রান্নার আয়োজন দেখা গেছে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে।
এ মাঠে শনিবার হবে দলটির বিভাগীয় সমাবেশ।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা বাধার কারণে আগেভাগে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নেতা-কর্মীরা সিলেটে আসতে শুরু করেছেন। তাদের জন্য এসব ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ক্যাম্প করা হয়েছে। এই মাঠেই তারা কাটাবেন দুই রাত।
বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির জন্য নির্ধারিত ক্যাম্পে বসে সবজি কাটতে দেখা গেছে এক নারীকে। রাতে সেখানে বড় হাড়িতে রান্না বসাতে দেখা গেছে। মাঠজুড়ে নেতা-কর্মীরা ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, গল্প করছেন।
হবিগঞ্জের ক্যাম্পেই বসা ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জিকে গৌছ। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতা-কর্মী আজকেই সিলেটে চলে এসেছেন। এখানে তাদের বিশ্রাম ও খাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।’
মাঠের প্রবেশমুখেই বিএনপির লোগো ও প্রতীক সম্বলিত ব্যাজ ও কোটপিন নিয়ে বসেছেন দুজন বিক্রেতা। তাদের একজন মামুন খান এসেছেন শরীয়তপুর থেকে।
তিনি বলেন, ‘ফরিদপুর, খুলনা ও বরিশালের সমাবেশেও আমি কোট পিন ও ব্যাজ বিক্রি করেছি। কেবল ব্যবসার জন্য না, দলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি সারাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’
মাঠের ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি স্টল। একটি স্টলে স্তুপ করে রাখা পানির বোতল। মাঠে আসা যে কেউ বিনামূল্যে সেখান থেকে পানি নিয়ে যেতে পারছেন।
এই স্টলে টানানো ব্যানার দেখে জানা গেল, নেতা-কর্মীদের জন্য পানি বিতরণের এই ব্যবস্থা করেছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজিনা নাসির। তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমানের পুত্রবধূ। তার স্বামী নাসের রহমান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি।
সমাবেশস্থলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বিকেলে বিএনপির স্থানী কমিটির সদস্য মঈন খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পরিদর্শন করেন।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটে সমাবেশের জন্য ৭০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট চওড়া মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজ প্রায় শেষ।
‘সমাবেশকে পণ্ড করতে সরকার নানা ভাবে বাধা দিচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটও ডাকা হয়েছে। তাই আগেভাগেই অনেক নেতা-কর্মী আসা শুরু করেছেন। তাদের বিশ্রাম ও খাওয়ার জন্য মাঠের মধ্যে ক্যাম্প করা হয়েছে। একেকটি ক্যাম্পে ৪৫০ থেকে ৫০০ জন থাকতে পারবেন। তবে শনিবার সমাবেশে আসা মানুষের জায়গা করে দিতে এসব ক্যাম্প ভেঙে ফেলা হবে।’
চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সব বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করছে বিএনপি।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সিলেটে সমাবেশ করবে দলটি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।