শনিবার সিলেটে বিএনপির সমাবেশের দিন বাসের পাশাপাশি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অন্য সব ধরনের যানবাহন।
শনিবার যে বাস চলবে না, সেই ঘোষণা এসেছিল বুধবারই। পরদিন ধর্মঘট ডাকেন অন্য পরিবহনের শ্রমিকরাও।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি। শনিবার সকাল ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।
‘শনিবার সিলেটে মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। আমাদের দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।’
দাবি কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিলেটের সবকয়টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি, সিএনজিচালিত অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সিলেটের লামাকাজী ও শ্যাওলা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ, হাইওয়েতে টমটম ও নসিমন চলাচল বন্ধ করতে হবে।’
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে আগে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, রংপুর এবং ফরিদপুরেও এই ধরনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। প্রতিবারই মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি বন্ধের দাবি সামনে আনা হয়েছে। তবে প্রতিবারই দেখা গেছে, বিএনপির সমাবেশ শেষ না হতেই বাস চলাচল শুরু হয়ে যায়। যে দাবিতে এই কর্মসূচি, সেগুলো নিয়ে পরিবহন মালিকরা আর কথা বলছেন না।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সিলেটে জমায়েত হতে যাচ্ছে বিএনপির। সেখানকার বাস মালিকরাও জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবার ভোর ৬টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত যাত্রী বহন বন্ধ থাকবে।
অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের আগে কমপক্ষে দুই দিন বাস বন্ধ থাকলেও সিলেটে সমাবেশের আগের দিন জেলাটিতে ইজতেমা ঘোষণা হয়। ফলে সেদিন না ডেকে জমায়েতের দিন বাস বন্ধের ঘোষণা এসেছে।
তবে সিলেট লাগোয়া জেলা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ধর্মঘট চলবে শুক্রবার থেকেই।
সিলেটের পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
গত রাতে বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ দাবি করেন, ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সিএনজি অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজন, সিলেটে রেজিস্ট্রেমনবিহীন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা, নতুন করে অটোরিকশার নিবন্ধন না দেওয়ার দাবিতে আমরা এই মাসের শুরুতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে স্মারকলিপি দেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা প্রতীকী ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শনিবার সকাল ৬ টা থেকে পরদিন ভোর ৬ টা পর্যন্ত বাস ধর্মঘট পালিত হবে।’
তবে ধর্মঘটে বিএনপির সমাবেশের কোন সমস্যা হবে না জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই পরিবহন ধর্মঘট ডাকিয়েছে। তবে এসব এখন আর আমরা পাত্তা দিচ্ছি না। এগুলো আমাদের গণসমাবেশে কোনো প্রভাব পড়বে না। সমাবেশে মানুষের ঢল নামবে।