কক্সবাজার সৈকতে এদিক-সেদিক প্লাস্টিক বর্জ্য না ফেলে নির্দিষ্ট বুথে জমা দিলে মিলবে বই ও গাছের চারার মতো নানারকম উপহার। সমুদ্র দূষণ ঠেকাতে মাসব্যাপী এই উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও বেসরকারি সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। আর এই কার্যক্রম শুরু হবে শুক্রবার থেকে।
সৈকতের লাইফগার্ড কর্মীরা জানালেন, প্রতিদিন হাজারও মানুষ কক্সবাজারের বিভিন্ন সৈকতে ঘুরতে গিয়ে প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট ও পলিথিন বর্জ্য এদিক-সেদিক ফেলে রাখেন। জোয়ারে সেগুলো ভেসে সাগরে গিয়ে পড়ে। এসব বর্জ্য সাগরের জন্য ক্ষতিকর। সৈকত ও সমুদ্র দূষণ থেকে পর্যটকদের বিরত থাকার করা নানাভাবে বলা হলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
লাইফগার্ড কর্মীদের লাবনীর ইনচার্জ ওসমান গণি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও যে কোনো জায়গা থেকে প্লাস্টিক পণ্যের বর্জ্য জমা দিলে উপহার পাওয়ার প্রথা চালু রয়েছে। ভারতের একটি রাজ্যে দুই কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য দিলে ৬টি ডিম উপহার দেয়ার মতো কর্মসূচি আছে। আমরাও চাই আমাদের এখানেও এমন কর্মসূচি থাকুক। যাতে সমুদ্রটা দূষণমুক্ত থাকে।’
‘সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হোন’, ‘প্লাস্টিক দিয়ে উপহার নিন’- এই স্লোগানে শুক্রবার থেকে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবনীসহ কয়েকটি পয়েন্টে উপহার দেয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করবে।
বাপা কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সৈকতে প্লাস্টিক ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। যদি নতুন এই কর্মসূচি সফলতার মূখ দেখে, তাহলে এটিকেই গুরুত্ব দিয়ে সমুদ্রকে নিরাপদ রাখতে হবে। আমরা চাই কর্মসূচিটি দীর্ঘমেয়াদী হোক। মানুষ এটা সম্পর্কে জানতে পারে।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্জ্য নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হয়। পর্যটকদের সচেতন করার লক্ষ্যে আমাদের এ আয়োজন। মাসব্যাপী কর্মসূচি মূলত বাস্তবায়ন করবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। যাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন। আমরা চাই দ্রুত বর্জ্য মুক্ত সৈকত।
‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য, স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদেরকে প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন করা। আর উপহার দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে উৎসাহী করা।’
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) বিল্লাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাসব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে যে কোনো ধরণের প্লাস্টিক বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিলে গাছের চারা, বই ও পাটের তৈরি ব্যাগ উপহার দেয়া হবে।’