নিবন্ধন প্রত্যাশী নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ডেভেলোপমেন্ট পার্টিসহ (বিডিপি) জামায়েত সংশ্লিষ্ট কোনো দলকে নিবন্ধন না দেয়ার দাবি তুলেছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) দপ্তরে বেলা ১১টায় স্মারকলিপি জমা দেয় শহীদ সন্তানদের এই সংগঠন প্রজন্ম ’৭১।
গত ১৪ নভেম্বর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে এমন কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেয়ার দাবি জানিয়েছে এই সংগঠনটি।
একই দাবিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতারাই দলটি গঠন করেছেন।
গত অক্টোবরে বিডিপি যেদিন ইসিতে নিবন্ধন জমা দিতে আসে, জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কি না- জানতে চাইলে বিডিপি সভাপতি বলেন, ‘ভুল কথা অনেকেই বলতে পারেন। এটা একটা নতুন দল। আমার সঙ্গে যারা আছেন তারা নতুন প্রজন্মের। বিভিন্নভাবে তাদের সংগ্রহ করছি। এখানে কারও কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি বা সহিযোগিতা ফিল করি না। এখন কেউ যদি কিছু বলে, আমরা এজন্য দায়ী নয়।’
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১ এর সভাপতি আসিফ মুনীর তন্ময় বলেন, ‘বাংলাদেশ ডেভেলোপমেন্ট পার্টি তারা নিজেদের নিবন্ধনের আবেদন করেছে তাতে আমরা শঙ্কিত। আমরা প্রজন্ম ’৭১ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে একটা স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা মূলত যেটা বলতে চেয়েছি শহীদ সন্তান ও পরিবার থেকে আমাদের একটা ইমোশনাল আপিল আছে। যে আমরা চাই যাদের কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত আছে জামায়েত ইসলামীর সাথে এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শের সাথে সেরকম কোনো ব্যক্তি যদি গঠন করেন এবং নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন তাদের যাতে নিবন্ধন না দেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘সেটি তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী তদন্ত করবেন। কোন কোন যুক্তিতে নিবন্ধন না দেয়া যেতে পারে সেগুলোর আওতায় যদি কোনোভাবে আসে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ডেভেলোপমেন্ট পার্টি নয় অন্যকোনো দল যদি থাকে তাদের নিবন্ধন যাতে না দেয়া হয়। যাতে করে রিভিউ কমিটি আমাদের আবেদনটি আমলে নেন বলে জানান।’
এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক অনল রায়হান বলেন, ‘মিডিয়ার খবর অনুযায়ী বাংলাদেশ ডেভোলোপমেন্ট পার্টির সভাপতি সেক্রেটারি জামায়েতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। খবর নিয়েছি তিনি জামায়েত ইসলামীর সুরা সদস্য ছিলেন এবং আছেন। সংগঠনের যারা সদস্য তারা কখনও না কখনও জামায়েত ইসলামীর সঙ্গে ছিলেন। ছাত্রশিবিরের সঙ্গে ছিলেন। জামায়েত ইসলামের আদর্শ বাংলাদেশ ডেভোলপমেন্ট পার্টি আপহোল্ড করছে। এটা সকল সুস্থ নাগরিক বোঝেন।’
এমনটি নির্বাচন কমিশনসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বুঝবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১২ সালের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে জামায়েতের নিবন্ধন যখন বাতিল হলো তখন আমরা সবাই জানতাম জামায়েত নতুন ফ্রন্ট খুলবে। নতুন চেহারা নিয়ে আসবে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যারা ছিলেন তাদের উদ্দেশে শহীদ সন্তান নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাই চায় নাই। তারা যদি সেই অপরাজনীতি থেকে সরে না আসে। তারা বাংলাদেশের মঙ্গল চায় না। তারা কি ক্ষমা চেয়েছেন ত্রিশ লক্ষ শহীদের কাছে? স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সেটা আপহোল্ড করবে। নিবন্ধন প্রত্যাশী দলের ভেতর আদর্শিকভাবে যদি থাকে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কেউ থাকে তাদের যাতে নিবন্ধন না দেয়া হয়।’
সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আসিফ মুনীর, সাইফুদ্দিন আব্বাস, নুজহাত চৌধুরী শম্পা, তানভীর হায়দায় চৌধুরী ও অনল রায়হান।