সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর গাড়িতে হামলার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে একই ঘটনায় উল্টো অভিযোগ তুলে মামলা করেছে স্থানীয় যুবলীগ।
বুধবার দুপুরে ওসমানীনগর থানায় মামলাটি করেন গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সংগঠনিক সম্পাদক রিপন মিয়া। মামলায় ২৪ জন বিএনপি নেত-কর্মীর নাম উল্লেখ করে ৩ শতাধিক জনকে আসামি করা হয়েছে।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে বিএনপির সমাবেশের প্রচারপত্র বিলি করতে গিয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে ওসমানীনগরে হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। তিনি নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী।
লুনার অভিযোগ, প্রচারপত্র বিলির সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে তার গাড়ি ভাংচুর করে।
তবে যুবলীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চলার সময় বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মীরাই তাদের ওপর হামলা চালায়।
এমন অভিযোগে বুধবার মামলা করেন যুবলীগ নেতা রিপন মিয়া।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোয়ালাবাজারে সাজু রেস্ট্রুরেন্টের সামনে যুবলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে জড়ো হন নেতা-কর্মীরা। এ সময় গোয়ালাবাজারের দক্ষিণ দিকে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠিসোটা এবং লোহার রড নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়।
হামলকারীদের মারধরে রিপন নিজেও আহত হয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
এদিকে ওই ঘটনায় মঙ্গলবার ঘটনাস্থল থেকেই ফয়ছল আহমদ লিমন ও মো. নুরুল ইসলাম নামে যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশ। বুধবার তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই দুজন ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসটিএম ফখর উদ্দিন, রাইকদাড়া গ্রামের আব্দুর রউফ আব্দুল, থানাগাঁও গ্রামের আব্দুল্লাহ মিছবাহ, ইছামতি গ্রামের মুক্তার হোসেন বকুল, খালেরপাড় গ্রামের ফজল আহমদ জনি, খাদিমপুর গ্রামের বাবুল হোসেন, পশ্চিম ব্রাহ্মণ গ্রামের রকিব আলী, গলমুকাপন গ্রামের কয়েছ আহমদ চৌধুরী, পশ্চিম মোবারকপুর গ্রামের মানিক মিয়া, মজলিশপুর গ্রামের রায়হান আহমদ, মির্জা সহিদপুর গ্রামের রিপন আহমদ, নিজ করনসী গ্রামের মান্নান বক্স, শাহজাহান আলী ও খালেদ হোসেন, এওলাতৈল গ্রামের ইসলাম উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন, জহিরপুর গ্রামের ডালিম মিয়া, নিজ বুরুঙ্গা গ্রামের সাজ্জাদুর রহমান, ময়নাবাজার গ্রামের সত্তার মিয়া, বরায়া নোয়াবাড়ী গ্রামের আবির মিয়া, কাশিকাপন গ্রামের গৌছ আলী ও বুরুঙ্গা বাজার এলাকার মজনু মিয়া।এ ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওসানীনগর থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘আটক দুজনকে যুবলীগ নেতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান ওসি।
এদিকে বুধবার বিকেলে গণসমাবেশকে সফল করতে বিশ্বনাথে প্রচারপত্র বিতরণ করেন তাহসিনা রুশদীর লুনা। এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-যুবলীগ আমাদের ওপর হামলা করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা করেছে। দেশে তারা একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’