গত জাতীয় নির্বাচনে ভোট নিয়ে ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির বক্তব্যে অসন্তোষ জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘জাপান কেন, কোন রাষ্ট্রদূতই বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নাক গলাবেন, এটা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না।’
বুধবার মেহেরপুর মুজিবনগরে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।
সকালে মন্ত্রী মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
ভোট নিয়ে জাপানি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাজ্জাক বলেছেন, ‘তাদের আবারও সর্তক করা হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এ দেশকে স্বাধীন করেছি। ফলে কারও কাছে পদানত হওয়া বা দেশের আত্মমর্যাদা রক্ষায় আমরা কাউকে ছাড় দেব না।’
গত সোমবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে গত নির্বাচনে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার যে অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই এমনটা শুনিনি। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর জাপান দূতাবাস সহিংসতা নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছিল। এটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। কারণ জাপান বাইরের কোনো দেশের নির্বাচনের পর বিবৃতি দেয় না।’
কৃষিমন্ত্রী কথা বলেন বিএনপির নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি নিয়েও। জানান, এটা মেনে নেয়ার কিছু নেই। বলেন, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট বলা আছে নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করবেন।
বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে বলেও মনে করেন রাজ্জাক। বলেন, ‘তারা এর আগেও নির্বাচন অংশ নিয়ে সহিংসতা করেছে। এবার সেই সহিংসতার পথ বেছে নিলে তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পর মন্ত্রী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কৃষি উদ্বাবনী মেলা ও আধুনিক কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশে খাদ্য মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত। আমরা সেই সংকট মোকাবিলায় সফল হব ‘
কৃষকদের ভূয়সী প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মানুষ তারা, যারা শরীরের ঘাম ঝরিয়ে ধান, গমসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে।…যারা ক্যাসিনো খেলে, দুর্নীতি করে, মাদকের কারবারি তারা কখনও দেশের সত্যিকারের মানুষ হতে পারে না।’
আমন ধানের সরকারি দর নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমনে উৎপাদন খরচ কম। তাই ২৮ টাকা দর ঠিকই আছে। বাজারে চালের দর চড়া। ফলে ধানে কৃষকের লোকসান হবে না।’
মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন, মেহেরপুর জেলা পরিষদের আব্দুস সালাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।