ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আবু কাউসার মিন্টু ১৫ বছর কাটিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে থাকা অবস্থায় খেলা দেখতে দেখতে দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবল দলের ভক্ত হয়ে যান তিনি।
২০১৩ সালে দেশে ফিরে এলেও ওই দেশের প্রতি টান এতটুকু কমেনি মিন্টুর। এবার ফুটবল বিশ্বকাপ নিজ গ্রামে বসেই দেখবেন তিনি। প্রিয় দলের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে ৪ কিলোমিটার লম্বা দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকা বানিয়েছেন তিনি ও তার স্ত্রী। সেজন্য ৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে জানিয়েছেন মিন্টু।
বাঞ্ছারামপুরের দড়িকান্দি ইউনিয়নের খল্লা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার ধারে দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকা লাগিয়েছেন মিন্টু ও তার স্ত্রী সাবিনা বেগম।
নিউজবাংলাকে মিন্টু জানান, জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান ১৯৯৮ সালে। ২০০২ সালে কোরিয়ায় হওয়া ফুটবল বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো সেখানে স্টেডিয়ামে বসে দেখেছেন। এবার নিজ গ্রামে বসে প্রিয় দলের সব খেলা দেখবেন।
তিনি বলেন, ‘আমি দেশে ফিরে ঢাকার গাজীপুরে একটি ছোটো ব্যবসা শুরু করি। তবে কোরিয়ার প্রেম আমার মনেই রয়ে গেছে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় আমি ১ হাজার ফুট লম্বা কোরিয়ান পতাকা ঝুলাই। কিন্তু এতেও কেন জানি আমার মন ভরেনি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- ২০২২ সালের বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে সবচেয়ে বড় পতাকা টানাবো।
‘৪ কিলোমিটার লম্বা কোরিয়ার পতাকা টানানোতে আমার স্ত্রীর অনেকটাই সহযোগিতা রয়েছে। আমার স্ত্রী সাবিনা মাটির ৮টি ব্যাংকে টাকা জমিয়েছেন। সেখান থেকে পাওয়া গেছে দেড় লাখ টাকা। আর আমার একটি আম বাগান আছে। সেটি বিক্রি করে দিয়েছি। এরপর মোট ৫ লাখ টাকা খরচ করে কোরিয়ার পতাকাটি তৈরি করা হয়েছে।’
দাড়িকান্দি গ্রামের ফজলু মিয়া বলেন, ‘হের শখ আসিলো বড় পতাকা বানাইবো, বানাইছে। আমডার গেরামো এর আগে অতবড় পতাকা কেউ বানাইছে না। ৪ কিলোমিটার পতাকা বানাইয়া তো আমডার গেরামরে ভাইরাল কইরা দিসে।’
বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার মেয়র শিব শঙ্কর দাস বলেন, ‘বিশ্বকাপ ফুটবল একটি বড় আয়োজন। বিশ্বের সব দেশের ফুটবল সমর্থকদের আবেগের একটি আয়োজন এটি।
‘দড়িকান্তি ইউনিয়নের আবু কাউসার মিন্টুর ৪ কিলোমিটার পতাকা তৈরির বিষয়টিও ঠিক তেমনই উৎসবমূখর। সমর্থন ও ভালোবাসা থেকে এই বিশাল পতাকা তৈরি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা।’