আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে ক্ষমতাসীন দলে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলটির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। তার দাবি, আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাগ গুছিয়ে রাখছেন, তারা পালাতে চাইছেন।
প্রখ্যাত রাজনীতিক মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর নিয়ে আপনারা আওয়ামী লীগের নেতারা ভয়ে আছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমি শুনেছি কেউ কেউ নাকি ব্যাগ গোছাচ্ছেন। ১০ তারিখ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন এমপি-মন্ত্রী অস্থির হয়ে আছে। এত ভয় কিসের?’
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপি যে সমাবেশ করছে তার ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় দলটি।
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছিলেন, সেদিন থেকে দেশ তাদের দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে চলবে। তবে শীর্ষ নেতারা পরে সেই বক্তব্য অনুমোদন করেননি। তবে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বক্তব্যের লড়াই শুরু হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপি যদি সেদিন বাড়াবাড়ি করে, তাহলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের মতো তাদের দমন করা হবে।
প্রেস ক্লাবের আলোচনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য ১০ ডিসেম্বরের পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি বলেন, ‘মানুষ আগ্নেয়গিরির মতো ফুঁসে উঠছে, সরকার কাপুরুষের মতো মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপিকে রুখতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এখন নষ্ট সময় চলছে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেষ্টা করছে বিএনপি। লক্ষ্যে পৌঁছানো নিয়ে কারও সঙ্গে আপস নয়।…,বিএনপি নেতা-কর্মীদের ত্যাগ স্বীকার করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
‘জাতির অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে, আবার নতুন করে দেশকে গড়ে করতে হবে। যে যত কথাই বলুক, এবার বিজয় অর্জন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
মওলানা ভাসানীর প্রশংসা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হতে হলে মওলানা ভাসানীকে প্রতি মুহূর্তে স্মরণ করতে হবে। তা হলে সফল হওয়া যাবে।’
আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “মওলানা ভাসানী দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি যদি বেঁচে থাকতেন, ২০১৪ ও '১৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, তাহলে তিনি বলতেন, ‘হারামজাদারা এটা কী করেছে’।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লা বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহও আলোচনায় বক্তব্য দেন।