অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় দি সিনফা নিটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান চীনের নাগরিক ইয়াং ওয়াং চুংসহ ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
আইনের এক ধারায় ইয়াং ওয়াং চুং ও খসরু আল রহমানকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরেক ধারায় ২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্য একটি ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মনসুরুল হক ও গোলাম মোস্তফাকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড দিলকুশা শাখার তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এক্সপোর্ট) আব্দুল ওয়াদুদ খান ও তৎকালীন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন চৌধুরীকে এক ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরেক ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আসামিদের সব ধারার সাজা একত্রে চলবে। আসামিদের মধ্যে ইয়াং ওয়াং চুং, খসরু আল রহমান এবং মনসুরুল হক পলাতক। বাকি ৩ জন জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
মামলা থেকে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে একটি জাল দলিল তৈরি করে তা খাঁটি হিসেবে ব্যাংকে বন্ধক রাখেন। দীর্ঘদিন ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার নিশ্চয়তা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। ব্যাংকের দায়দেনা বাবদ ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা পরিশোধ না করে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। যাতে ব্যাংক জাল জালিয়াতির কাগজপত্র দিয়ে গ্রহণ করা বন্ধকী জমি বিক্রি করে তাদের টাকা উদ্ধার করতে না পারে, তাদেরও কোনো হদিস করতে না পারে। আর এর ফলে প্রকৃত জমির মালিক হয়রানির শিকার হন।
এ ঘটনায় দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় মামলা করেন এবং মামলাটি তদন্ত করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ২৪ জুন অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।