বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির ঘোষণা যুগপৎ আন্দোলনের, কর্মসূচি একলা

  •    
  • ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:৪৭

যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে একা একা কর্মসূচি পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে কতটা স্ট্রং সেটা দেখানোর সময় এসেছে। আর সে কারণেই এককভাবে এই গণসমাবেশ করা হচ্ছে। সাত-আট দিন মিটিং করে কেন্দ্রীয় সব নেতার মতামত নিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে আমরা একলা এই কর্মসূচি করব। আর বিএনপির শক্তি সম্পর্কে আইডিয়া আছে তো নাকি?’

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করলেও গত জুলাই থেকে রাজপথে কোনো কর্মসূচিতে অন্য দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে না বিএনপি।

বিএনপির দাবি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার। এই দাবিতে ধীরে ধীরে রাজপথে কর্মসূচি বাড়াচ্ছে তারা। তবে এসব কর্মসূচিতে না জোটের শরিক, না সমমনা অন্য দল-কাউকে ডাকা হচ্ছে না।

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপির ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়, যা শেষ হতে যাচ্ছে আগামী আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে।

সেই দিনটি ঘিরে বিএনপিতে উত্তেজনা আছে। এমন ঘোষণাও এসেছে যে, সেদিন থেকে দেশ চলবে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে।

বিএনপির এমন ঘোষণাও আছে যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে পারলে তারা এককভাবে দেশ চালাবে না। তাদের সঙ্গে যারা থাকবে, সবাইকে নিয়ে হবে জাতীয় সরকার।

তবে ১০ ডিসেম্বরের সেই ‘মহা পরিকল্পনা’ নিয়েও সমমনা দলগুলোকে কিছু জানানো হচ্ছে না। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না সেই কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার আগ্রহ দেখালেও তাকে বিএনপি যেতে বলেনি।

যে দাবিতে বিএনপি এবার মাঠে নেমেছে, সেই দাবিতে ২০১৩ সালেও আন্দোলনে নামে দলটি, যা চলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটের এক সপ্তাহ পর পর্যন্ত। তবে সে সময়ের তুলনায় এখনকার কর্মসূচিগুলোর পার্থক্য আছে।

তখন বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে জোর দিয়েছে। কর্মসূচিতে নিজেদের পাশাপাশি শরিক দলের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল স্পষ্ট।

তবে এবার এখন পর্যন্ত সে পথে যাচ্ছে না তারা। সহিংস কর্মসূচির বদলে নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ত করতে বড় বড় সমাবেশ করছে। গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। শুরুর দিকের তুলনায় এখনকার কর্মসূচিগুলোতে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতি বাড়ছে।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেও সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন সেই সরকারে বিএনপির প্রভাব ছিল স্পষ্ট। তবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ন্ত্রণ হারায় দলটি।

১৫ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকার পাশাপাশি দুই দফা সরকারপতনের আন্দোলনে ব্যর্থতা এবং নিজেদের দাবি ‘ভুলে’ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যোগ দেয়া, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডসহ নানা ইস্যুতে নেতা-কর্মীরা গত কয়েক বছরে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তাদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনাই বিএনপির আপাতত লক্ষ্য।

যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে একা একা কর্মসূচি পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে কতটা স্ট্রং সেটা দেখানোর সময় এসেছে। আর সে কারণেই এককভাবে এই গণসমাবেশ করা হচ্ছে।

‘সাত-আটদিন মিটিং করে, কেন্দ্রীয় সব নেতাদের মতামত নিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে আমরা একলা এই কর্মসূচি করব। আর বিএনপির শক্তি সম্পর্কে আইডিয়া আছে তো নাকি?’

বিএনপি নিজেদের শক্তিতে বলীয়মান, তাদের অন্য কারো থেকে শক্তি ধার করতে হবে না বলে- জানিয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান টুকু বলেন, ‘তারপরে যারা আমাদের সঙ্গে আসবে তাদের তো ওয়েলকাম জানাবই। এটা এক্সট্রা বেনিফিট। তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে প্রথমে নিজের ক্ষমতা দেখাতে হবে যেটাই বেনিফিট আছে বোনাস আকারে।’

তাহলে যুগপৎ আন্দোলনের কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, সেই বিষয়টি পরে স্পষ্ট করা হবে।

১০ ডিসেম্বর কী হবে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা আসবে?

দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বর চমক আছে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে পরবর্তী আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা আসবে ঢাকার এই গণসমাবেশ থেকে। সেখান থেকে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে পরিকল্পনা জানানো হতে পারে।

প্রথম দফায় ২৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে বিএনপি। গত ২৪ মে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে প্রথম দফার সংলাপ শুরু হয়। যা ৩ আগস্ট গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে শেষ হয়।

গত ২ অক্টোবর দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করে বিএনপি। যা এখনও চলছে।

বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত। এখনও অব্দি এমনটায় প্রত্যাশা যে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের মঞ্চে এটি ঘোষণা হবে। সেদিন হয়ত এ বিষয়ে একমত পোষণ করা অন্যান্য দলের নেতারাও মঞ্চে থাকবেন, যদিও এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ডান, বাম ও মধ্যপন্থি ৩০ থেকে ৩৫টি দলকে এক সুতোয় গেঁথে সরকার পতন আন্দোলন মাঠে গড়াতে চায় বিএনপি।

বিএনপির ২০-দলীয় জোটের সব শরিকই যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে একমত। জোটের বাইরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাশনাল পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী), ডেমোক্রেটিক লীগ, ইসলামিক পার্টি, এনডিপি, পিপলস লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় দল, মাইনরিটি জনতা পার্টি ও গণফোরামও (মন্টু) বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে যাওয়ার আগ্রহের কথা বলেছে।

এ বিভাগের আরো খবর