সারা দেশে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (তিন চাকার বাহন) ও মোটরসাইকেল বন্ধ না করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। আপাতত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে। সে লক্ষ্যে একটি নীতিমালাও তৈরি করা হচ্ছে।
ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা- সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম এই মহাসড়কে প্রাথমিকভাবে এই পর্যবেক্ষণ করা হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর বিআরটিএ ভবনে ন্যাশনাল রোড সেফটি কাউন্সিলের সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২২ মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করলেও অবস্থান পাল্টেছে সরকার। লোকবলের অভাবে সবগুলোতে নিবিড় তদারকি সম্ভব নয় বলে জানান সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার চেয়ে নিয়ন্ত্রণটা কীভাবে করা যায়, আমরা সে ব্যাপারে গুরুত্বটা বেশি দিচ্ছি। এই জনবহুল দেশে এটি বহু বেকারের কর্মসংস্থান। আমরা নীতিমালা করার কথা আমরা অলরেডি বলেছি। নীতিমালা হচ্ছে।’
বিআরটিএ ভবনে ন্যাশনাল রোড সেফটি কাউন্সিলের সভায় ওবায়দুল কাদের
দেশের ২২টি মহাসড়ক থাকলেও কেবল পাঁচটি কেন মনিটর করা হবে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এবং ম্যানপাওয়ার অত বেশি নেই যে সারাদেশে এটা মনিটর করবে। আপাতত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সড়কে মনিটর করা হবে। ধীরে ধীরে বাড়বে। এর উপরে একটা নীতিমালা করা হচ্ছে।’
মহাসড়কের যে পরিমাণ চাপ সে তুলনায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও হাই পুলিশের জনবল বাড়েনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টায় আছি, জনবলটা বাড়াতে পারলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব এবং চলাচল বন্ধ রেখে সেটিও কার্যকর করতে পারব।’
ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন
ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করতে এখন আর বিআরটিএ কার্যালয়ে যেতে হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। অনলাইনে ঘরে বসেই এই আবেদন করা যাবে।
‘আগামীকাল থেকে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন তারা ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। শুধুমাত্র একবার তাকে পরীক্ষার জন্য বিআরটিএর কার্যালয়ে আসতে হবে’-বলেন তিনি।
অন্য এক প্রশ্নে তিনি জানান, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকার একটি ঋণের আলোচনা চলছে।
এই প্রকল্পটির প্রস্তাব এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই তা একনেক সভায় যাবে। সেখান থেকে এলে আমরা ইম্পিলিমেন্টে যাব। …রোড সেফটি আমাদের খুবই প্রয়োজন। সড়কের নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।’
রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সংসদ সদস্য ও পরিবহন নেতা শাজাহান খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।