প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২-এর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনকালে দেশে ২০৪টি ফায়ার স্টেশন ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে চালু ফায়ার স্টেশন ৪৯১টি। নতুন ২৮৭টি ফায়ার স্টেশন চালু করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে আরও ৫২টি নতুন ফায়ার স্টেশন চালু করা হবে। তখন ফায়ার স্টেশনের মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৪৩টি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ফায়ার সার্ভিসের জনবল বৃদ্ধিতেও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছেন। ২০০৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানের মোট জনবল ছিল ৬ হাজার ১৭৫ জন। বর্তমানে এই জনবল হয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৩ জন। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জনবলের সংখ্যা হবে প্রায় ১৬ হাজার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সংস্থাটির জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার জন্য অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।’
বক্তব্যের শুরুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নি দুর্ঘটনায় ১৩ জনসহ বিভিন্ন সময় মৃত ৩০ জন ফায়ারফাইটারের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘ফায়ারফাইটাররা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জান-মাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। একসময় দমকল বলে অবহেলা করলেও এখন সবাই ফায়ার সার্ভিসকে দুঃসময়ের বন্ধু মনে করে। সক্ষমতা বাড়ানোর কারণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও দেশের মাটিতেই আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বিশ্বমানের সুবিধা সংবলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হলে এখানে একসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের এক হাজার সদস্যকে উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব হবে। এমনকি আমরা বিদেশের ফায়ার সদস্য এখানে এনে উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারব।’
আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, ‘২০০৯ সালে যেখানে ফায়ার সার্ভিসের বহুতল ভবনে কাজ করার মতো ১টি ৪৭ মিটারের পুরনো গাড়ি ছিল বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কাজের জন্য ২৮টি উঁচু মইয়ের গাড়ি আনা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতায় আগুন নেভানোর ৬৮ মিটারের লেডার সংবলিত গাড়ি ফায়ার সার্ভিসের যান্ত্রিক বহরে যোগ করা হয়েছে। ফলে ফায়ার সার্ভিস এখন ২২ তলা পর্যন্ত আগুন নেভাতে সক্ষম। ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ৬৩টি থেকে ১৯০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। দেশের সব স্টেশনে পর্যায়ক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।’
সেবার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রেশন ও ঝুঁকিভাতা চালু করা হয়েছে, কর্মীদের জন্য নতুন পোশাক দেয়া হয়েছে, পদকের সংখ্যা ও সম্মানি বাড়ানো হয়েছে। ফায়ারফাইটারসহ কয়েকটি পদের বেতন ও মর্যাদা বাড়ানো হয়েছে।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।