ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার হাওয়া লেগেছে মেহেরপুরের দর্জিবাড়িতে। দর্শকদের পছন্দের দেশের পতাকা ও জার্সি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অন্য সব কাজ বাদ দিয়ে শুধু পতাকা তৈরি চলছে সেখানে। প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে কে কত বড় পতাকা বানাতে পারে সেটা নিয়ে।
দর্জি কাজের সঙ্গে জড়িত আলেক উদ্দিন জানান, প্রায় বিশ বছর ধরে দর্জি পেশায় আছি। সবার এখন রেডিমেড পোশাকের দিকে ঝোঁক। তাই দর্জির চাহিদা কমে গেছে। তবে দুই ঈদ ও বছরের শুরুতে স্কুল ড্রেস বানানোর সময় কাজের চাপ বাড়ে। হঠাৎ করেই এখন পতাকা বানানোর চাপ শুরু হয়েছে। ছোট বড় সব ধরনের পতাকা বানানোর অর্ডার পাচ্ছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেও অর্ডার শেষ করতে পারছি না।
গাংনী উপজেলার বামন্দী বিশ্বাস টাওয়ারের দর্জি রকি আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, আমার এখন দোকান থুয়ে বাড়ি যাওয়ার কাইদা নেই। কাস্টমাররা প্রতিযোগিতা লাগিয়ে দিয়েছে কে কত বড় পতাকা বানাতে পারে। কেউ চায় আর্জেন্টিনার পতাকা। কেউ চায় ব্রাজিল, তো কেউ চায় জার্মানির পতাকা। গতকাল ১৭০ হাত লম্বা ব্রাজিলের পতাকা বানিয়েছি। মজুরি দিয়েছে ১৫শ টাকা। চাপ কমাতে মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছি। বলে দিয়েছি, এখন থেকে এক হাত সাইজের পতাকা বানালে একশ টাকা লাগবে। তবুও পতাকা বানানোর অর্ডার এবং অ্যাডভান্স দুটোই পাচ্ছি।
গাংনী উপজেলার ভারত সিমান্ত ঘেষা কাজিপুর গ্রামের দর্জি ইন্তাজ আলী নিউজবাংলাকে জানান, একটি ব্লাউজ-পায়জামা বানাতে একশ টাকা, বোরখা বানাতে ৪৫০ টাকা, পেটিকট বানাতে ৫০ টাকা করে পাই। এসব কাজে যতটা সময় ও পরিশ্রম লাগে, সেই অনুপাতে মজুরি পাই না। অন্যদিকে চাহিদা মতো পতাকা বানিয়ে দিতে পারলে মজুরির পাশাপাশি বকশিশও পাওয়া যাচ্ছে।
পতাকা বানাতে আসা সাহেব নগর গ্রামের সাঈদ আহমেদ জানান, আমার এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। তেমন একটা ফ্রি সময় পাচ্ছি না। তারপরও গত শুক্রবার ৭৬ ফিট লম্বা ব্রাজিলের পতাকা বানাতে দিয়ে আজ নিতে এসেছি। কিন্তু দর্জি পতাকা বানিয়ে শেষ করতে পারেনি। আগামীকাল দিতে চাইছে। তবে এবারের বিশ্বকাপ কিন্তু ব্রাজিল পাবে।
উপজেলার ইটভাটা ব্যাবসায়ী রাশিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, সবার আগে বাংলাদেশ। তাই আমি বাংলাদেশের পতাকা বানিয়েছি। সেই সাথে একশ মিটারের আর্জেন্টিনার পতাকা বানিয়ে আমার বাড়ির ছাদে টাঙিয়ে দিয়েছে। এবার আর্জেন্টিনা দল হেব্বি মজবুত। বিশ্বকাপ মেসিদের হাতেই উঠবে।