আগামী বছরে মার্চে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাখা মেলতে পারে জাপানের আকাশে। বাংলাদেশের প্রস্তুতি চুড়ান্ত হলেও তা উদ্বোধনে জাপান মার্চ পর্যন্ত সময় চায়।
বিমানের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট শুরু হলে জাপান হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং এশিয়ার অন্য অঞ্চলগুলোর সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগের পথ খুলবে বাংলাদেশের।
জাপানের নারিতায় ফ্লাইট চালু করতে কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছিল বিমান। ফ্লাইট শুরুর বিষয়ে জাপান সরকারের অনুমোদনও বেশ আগেই পায় বিমান।
অবশ্য বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিলো নভেম্বরেই এই রুটটি চালু করার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে জাপান যাবে। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি দেশটিতে অবস্থান করবেন।
বিমানের পরিকল্পনা ছিলো প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের দিনই নারিতায় নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করার। তবে তাতে সম্মতি দেয়নি জাপান কর্তৃপক্ষ। ফলে নিয়মিত ফ্লাইটের জন্য বিমানকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত।
বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারিতায় আমদের প্রত্যাশা ছিলো যে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের দিনই উদ্বোধন করার। কিন্তু জাপান সরকার চাচ্ছে এটা সাধারণ ফ্লাইট না হয়ে ভিভিআইপি ফ্লাইট হিসেবে যাবে। এটা জাপানের ডিজায়ার।
‘তবে আমরা মার্চে নিয়মিত ফ্লাইট অপারেট শুরু করবো। এটাও তাদের ইচ্ছা। আমাদের দিক দিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। তবে জাপান মার্চ পর্যন্ত সময় চায়।’
জাপানে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে বিমানকে ফিফথ ফ্রিডম সুবিধাও দিয়েছে দেশটি। অর্থাৎ ঢাকা ও নারিতার মধ্যবর্তী একটি বিমানবন্দর থেকে যাত্রী নিয়েও এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।
এতদিন তা আটকে ছিল করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধের কারণে। করোনার মধ্যে জাপান সরকার দেশটিতে বিদেশি পর্যটকদের আগমনে এতদিন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছিল। তবে সম্প্রতি সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটি। এরপর থেকেই দেশটিতে ফ্লাইট শুরু করতে তোড়জোর শুরু করে বিমান।
বিমানের আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী জাপান এয়ারের সঙ্গে কোড শেয়ার চুক্তিতে যাওয়ার কথা সংস্থাটির। দুটি এয়ারলাইনসের মধ্যে এ ধরনের চুক্তি থাকলে একজন যাত্রী কোনো একটি এয়ারলাইনসের টিকিট কেটেই অন্য এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারেন।
বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনস এ ধরনের চুক্তির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করলেও এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম উদ্যোগ। অবশ্য শুরুতেই এ ধরনের চুক্তি হওয়ার আশা ক্ষীন।
বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে পয়েন্ট টু পয়েন্ট সেবা দিয়ে থাকে বিমান। একসময় অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট চলাচল করলেও এখন সেগুলো বন্ধ।
বিমানের বহরে লম্বা দূরত্বে উড়তে সক্ষম অন্তত ১০টি উড়োজাহাজ থাকলেও রুট না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলোর সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছয়টি বোয়িং সেভেন এইট সেভেন ও চারটি বোয়িং ট্রিপল সেভেন মডেলের উড়োজাহাজ। এর প্রত্যেকটি টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম।
এতদিন বিমানের লম্বা দূরত্বের ফ্লাইট চালু ছিল শুধু লন্ডন রুটে। টরন্টোতে ফ্লাইট শুরুর পর এটিও যোগ হয় লম্বা দূরত্বের রুটের তালিকায়।
ঢাকা থেকে সরাসরি আকাশপথে নারিতা যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা। চালু হলে এটিও বিমানের লম্বা দূরত্বের রুট হবে।
টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করায় ভারত, নেপালসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের মধ্যে রুটটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বিমান আশা করছে নারিতা রুটেও মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক যাত্রী পাওয়া যাবে।