বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দল দেখে নয়, সবার জন্য কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২২ ১৫:০৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র আছে। কেউ হয়তো দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, কেউ হয়তো আলাদাভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যখন আপনি ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, আপনার দায়িত্ব কিন্তু সবার জন্য।’

জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা একক কিংবা কোনো দলের হয়ে নির্বাচিত হলেও শুধু সমর্থকদের দিকে না তাকিয়ে জনসেবার মানসিকতা নিয়ে সব মানুষের উন্নয়নে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোমবার দুপুরে দেশের ৫৯টি জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

নবনির্বাচিত ৫৯ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ৬২৩ নির্বাচিত সদস্যকে শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আপনারা এসেছেন। কিছুক্ষণ আগে আপনার শপথ গ্রহণ করলেন। আপনাদের দায়িত্ব, কর্তব্য জনগণের প্রতি অনেক বেশি এখন বৃদ্ধি পেল।’

নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েছেন ভোগ দখলের জন্য না; জনগণের সেবা দেয়ার জন্য। আপনারা যদি চান জনগণের সেবা দিয়ে মন জয় করতে পারেন। আর যদি চান জনগণের সম্পদ লুট করে চিরদিনের জন্য বিদায় নিতে পারেন। এটা হলো বাস্তবতা।

‘কাজেই আমি চাই, যেহেতু জনগণ আপনাদের ওপর ভরসা রেখেছে আপনারা জনগণকে সেবা দিয়ে, জনগণের মন জয় করে দেশের উন্নয়নে আত্মনিবেশ করবেন।’

দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব রয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা এলাকার কী কী ধরনের অসুবিধা আছে, মানুষের জন্য কী কী কল্যাণকর কাজ করা যেতে পারে, মানুষের উন্নয়নের জন্য কী কী কাজ করতে পারে, সেটা আপনাদের ভাবতে হবে।

‘হ্যাঁ, আমাদের এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র আছে। কেউ হয়তো দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, কেউ হয়তো আলাদাভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যখন আপনি ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, আপনার দায়িত্ব কিন্তু সবার জন্য।’

ওই সময় নিজের উদাহরণ তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কিন্তু উন্নয়নটা কে আমাকে ভোট দিল, কোন এলাকায় আমার দল, সংগঠন—সেটা আমি দেখিনি। আমি সার্বিকভাবে উন্নয়নের ব্যবস্থা নিয়েছি। একেবারে প্রতিটি মানুষ যেন উন্নয়নের ছোঁয়া পায়, সেভাবে ব্যবস্থাটা নিয়েছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে তার কন্যা বলেন, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে ক্ষমতা দিয়ে তিনি এই ঘুণে ধরা সমাজটাকে ভেঙে নতুন সমাজ যে গড়তে চেয়েছিলেন, সেটা সম্পূর্ণ করতে দেয়া হয়নি। আজকে তিনি যদি সেটা করতে পারতেন, তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে ওই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া দৃষ্টান্ত হতো না; বাংলাদেশই দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বের বুকে স্থান পেত।’

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দেশ যখন পেছনের দিকে যাচ্ছিল, তখনই একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। এই লাখো শহীদের রক্ত ব্যর্থ হতে পারে না। বাংলাদেশকে আমাদের উন্নত করতে হবে।’

২১ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য হয়ে ওঠে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জনকল্যাণমূলক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তার মাধ্যমেই দেশের মানুষের উন্নয়নটা যেন নিশ্চিত হয়।’

নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নই সরকারের লক্ষ্য বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘এখানে ধনী, দরিদ্র বা যারা রাজধানীতে থাকবে বা একেবারে গ্রামে থাকবে, তাদের জীবনে বৈষম্য থাক সেটা আমি চাই না।’

ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়নের মধ্য দিয়ে ২১০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন কীভাবে হবে তার সুনির্দিষ্ট ছক তৈরি করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সবাই তো আর চিরদিন বাঁচে না, চিরদিন বাঁচবেও না, কিন্তু একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য যদি স্থির করা থাকে, হ্যাঁ, সময়ের বিবর্তনে সেগুলো পরিবর্তন করতে হবে, প্রয়োজনের খাতিরে নিতে হবে, একটা লক্ষ্য স্থির থাকলে যেকোনো অর্জন সম্ভব।’

ফসল উৎপাদনের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফসলি জমি বাঁচাতে পরিকল্পনামাফিক ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এখন সাড়ে ১৬ কোটির ওপরে আমাদের মানুষ। তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে। আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলতে চাই না। কারণ জাতির পিতা বলেছেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। ভিক্ষুক জাতি হতে চাই না।’

মাটি ও মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনবান্ধব সরকার। জনগণের কল্যাণে কাজ করা আমাদের লক্ষ্য।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যেহেতু সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে, তাই সবাইকে উৎপাদনমুখী হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আবারও আমি অনুরোধ করব, জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি, জনগণের সেবা করে জনগণের হৃদয় জয় করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর