বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজের দিন ‘নৌকা থেকে পড়ে যান’ একজন

  •    
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:৪২

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুড়িগঙ্গার এই অংশটায় নৌকা দিয়েই পারাপার হতে হয়। সোয়ারিঘাট, পানঘাট, আরও অনেকগুলো ঘাট রয়েছে ওখানে। তবে উনি নৌকা থেকে পড়েই মারা গেছেন, এমনটা আমরা এখনই বলছি না। আমরা তদন্ত করছি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিখামারি দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজ হন ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গা নদীর সোয়ারিঘাট এলাকায় নৌকা থেকে একজনকে নদীতে পড়ে যেতে দেখেছেন- এমন এক প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে পুলিশ।

তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, নৌকা থেকে পড়ে নদীতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তি দুরন্ত বিপ্লব হতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আরও সময় লাগবে।

দুরন্ত বিপ্লবের স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনি সাঁতার জানতেন না। তবে নৌকা থেকে পড়ে তার মৃত্যু হলে দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা নয়।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় শনিবার বিকেলে একটি মরদেহ পায় পুলিশ। রাতে মরদেহটি বিপ্লবের বলে নিশ্চিত করেন তার স্বজনেরা। রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিপ্লবের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক নারায়ণগঞ্জগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার মফিজ উদ্দিন প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, বিপ্লবকে হত্যা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দুরন্ত বিপ্লবকে খুনের সন্দেহ

নিউজবাংলাকে রোববার দুপুরে তিনি বলেন, ‘বিপ্লবের মাথায় ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাথার পেছনের দিকে বেশি আঘাত। বুকের দুই পাশে আঘাতের দাগ আছে। সাধারণ সমান্তরাল কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহে যেসব আঘাত রয়েছে তাতে বোঝা যায়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এটি ধারণা করছি।’

এ ঘটনার তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান রোববার বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোয়ারিঘাটের দিকে নৌকা থেকে একজনের পড়ে যাওয়ার কথা আমরা শুনেছি। জিঞ্জিরার বিপরীতে নদীতে ঘটনাটি ঘটে। ওনার (বিপ্লব) মোবাইল কললিস্ট ও নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেখানে ঘটনাটি ঘটে, সেখানেই ওনার অবস্থান ছিল।

‘বুড়িগঙ্গার এই অংশটায় নৌকা দিয়েই পারাপার হতে হয়। সোয়ারিঘাট, পানঘাট, আরও অনেকগুলো ঘাট রয়েছে ওখানে। তবে উনি নৌকা থেকে পড়েই মারা গেছেন, এমনটা আমরা এখনই বলছি না। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি শাহ জামান বলেন, ‘আমরা এখনও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাইনি। আমাদের তদন্ত চলমান আছে।’

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান রোববার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় একটি নৌকা থেকে একজনের নদীতে পড়ে যাওয়ার একটি তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে ওই নৌকার মাঝি বা যাত্রীদের কাউকে এখনও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় একজনের কাছ থেকে আমরা ঘটনাটি জেনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

দুরন্ত বিপ্লবের মাথায় আঘাতসহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বক্তব্য বিবেচনায় নিয়েও তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওনার (বিপ্লব) মরদেহ পাওয়া গেছে। কামরাঙ্গীরচরে ৭ তারিখে নৌকা থেকে একজনের পড়ে যাওয়ার একটা ঘটনার কথা শুনেছি। তিনি নদীতে পড়ে যেতে পারেন। স্থানীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমাদের এ কথা বলেছেন।’

প্রত্যক্ষদর্শী কী বলেছেন জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি নদীতে পড়ে গেছেন, এতে তিনি মারা যেতে পারেন। ওই প্রত্যক্ষদর্শী নাকি দেখেছেন।’

ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দুরন্ত বিপ্লব কয়েক বছর ধরে কেরানীগঞ্জে ‘সোনামাটি অ্যাগ্রো’ নামে একটি কৃষি খামার পরিচালনা করছিলেন। ৭ নভেম্বর বেলা ৩টার দিকে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি জানান, ঢাকার মোহাম্মদপুরের মায়ের বাসায় তিনি আসছেন।

তবে মায়ের বাসায় আসেননি দুরন্ত বিপ্লব। তার কোনো সন্ধান না পেয়ে ৯ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবার।

নৌকা থেকে পড়ে দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু হয়নি বলে মনে করছেন তার স্বজনরা। বিপ্লবের বোনের স্বামী ইমরুল খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার মাথা ও শরীরে আঘাতের যে চিহ্ন তা নৌকাডুবির কারণে হতে পারে না। আমরা মামলা করব।’

তিনি জানান, দুরন্ত বিপ্লব কেরানীগঞ্জে রতনবাবুর খামার নামে একটি খামার লিজ নিয়েছিলেন। খামারে আরও কয়েকজন পার্টনার থাকলেও তার তত্ত্বাবধানেই সব কাজ চলছিল।

দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কম ছিল বলে অভিযোগ করছে পরিবার।

নেত্রকোণার পূর্বধলার ছোট ইলাশপুর এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে ৫১ বছর বয়সী বিপ্লব পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। স্ত্রী ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে তার।

এ বিভাগের আরো খবর