নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া মরদেহটি নিখোঁজ কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লবের।
শনিবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধারের পর রাত ৩টার দিকে স্বজনরা তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ৫১ বছর বয়সী দুরন্ত বিপ্লব নেত্রকোনার পূর্বধলার ছোট ইলাশপুরের প্রয়াত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
গত ৭ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তার পরিবারের লোকজন থাকেন ঢাকায়।
মরদেহ উদ্ধার করা ফতুল্লার পাগলা নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শাহ্জাহান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেলে পাগলা ঘাট থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাত ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিহতের স্বজনরা। পরে রাত ৩টায় নারায়ণগঞ্জ এসে নিহতের ছবি দেখে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন তারা৷’
শাহ্জাহান আলী বলেন, ‘অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। মরদেহ ফুলে চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। মাথায় লালচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বজনরা জানিয়েছেন, দুরন্ত বিপ্লব নামের ওই ব্যক্তি গত ৭ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন৷ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আছে৷ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শেখ ফরহাদ জানান, দুপুরে ওই মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে৷ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলা যেতে পারে৷
স্বজনরা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লব আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় উপকমিটিরও সদস্য ছিলেন৷ কেরানীগঞ্জে তার কৃষি খামার ছিল৷
তারা জানান, গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে মায়ের বাসায় যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন৷ নিখোঁজের আগে তার মোবাইল ফোনের সবশেষ লোকেশন ছিল কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ৷
দুরন্ত বিপ্লবের ছোট বোন শাশ্বতি বিপ্লব তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘এমন মৃত্যু ভাইয়া ডিজার্ভ করে না। কোনো দিন না। নারায়ণগঞ্জের পাগলাঘাটে কচুরিপানার ওপর এমন অসহায়ভাবে ভেসে থাকতে পারে না দুরন্ত বিপ্লব নামের কিংবদন্তিতুল্য ভাইটা আমার। সারাজীবন নিজের খেয়ালের রাজা ও। যারা ওকে চেনে, তারা জানে কী প্রবল আত্মসম্মানবোধ ছিল ওর।
‘নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আছে এখন। আমরা কাল রাত ৩টায় সেই ছবি দেখে এসেছি। দুর্জয়, ইমরুলরা ওকে আনতে গেছে। ৭ তারিখেই ও চলে গেছিল আমাদের ছেড়ে। কামরাঙ্গীরচর থেকে পাগলা পর্যন্ত ভেসে যেতে ওর ৫ দিন লেগেছে।’