বরিশাল আদালতে মাদকের পৃথক মামলায় ১২ আসামি দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর জেলে না দিয়ে ব্যতিক্রমী সাজা দিয়ে তাদের এক বছরের প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছিলেন বিচারকরা।
গত এক বছর সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে থেকে তাদের কেউ হয়েছেন জনপ্রতিনিধি, কেউ ব্যবসায়ী আবার কেউ মৎস্যজীবী।
ব্যতিক্রমী এই সাজাকালে তারা মাদক সেবন ও বিক্রি বন্ধ করে অংশ নিয়েছেন মাদকবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়েছেন গাছ, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন সাধ্যানুযায়ী।
এ ছাড়া আসামিরা প্রবেশনকালে আদালতের নির্দেশনা মতো জীবন যাপন করেছেন।
বুধবার দুপুর ১২টায় আদালতে ওই আসামিদের প্রবেশন সময়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ। এর আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ওই ১২ জনকে নিয়ে কাউন্সিলিং করেন তিনি।
আসামিদের মধ্যে বরিশাল জেলার একটি ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া একজন বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার দায় স্বীকারের পর আদালত আমাকে প্রবেশনে সংশোধনের জন্য পাঠায়। গত এক বছর আদালতের নির্দেশনা মেনে জীবন যাপন করে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি।’
নগরীর বাসিন্দা আরেক আসামি জানান, মাদকসহ আটকের পর আদালত তাকে মাদক থেকে বিরত ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বলে। তিনি এখন মাদক ছেড়ে উজিরপুর উপজেলায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
আরেকজন জানালেন, আদালতের নির্দেশনা মেনে একটি কওমি মহিলা মাদ্রাসার নির্মাণকাজে দানসহ তিনি মাদকবিরোধী প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মাছ চাষ করে পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।
প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ায় শিগগিরই আসামিরা ব্যতিক্রমী সাজা থেকে মুক্তি পেয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেন। তাদের আর আদালত প্রাঙ্গণে ঘুরতে হবে না। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ছাড়াও তাদের ভালো কাজে পরামর্শ ও সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মাদকবিরোধী কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে বুধবার জাতীয় যুব পুরস্কার পাওয়া স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘আবিষ্কার’ এর উদ্যোগে আসামিদের মধ্যে মাদকবিরোধী স্লোগানসংবলিত টি-শার্ট ও প্লেকার্ড দেয়া হয়।