সম্প্রতি মহাসড়কে বেশকিছু ডাকাতির ঘটনা অনুসন্ধান করতে নেমে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল সম্পর্কে জানতে পারে র্যাব। এরপর তাদের ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানা এলাকায় জাঙ্গাল গ্রামের সুন্দরবন ফিলিং স্টেশনের পাশে ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়ার সময় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩।
গ্রেপ্তার ডাকাতরা হলেন কাওসার আলী, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আলী আকবর ও ইমামুল হক।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি ডিবি জ্যাকেট, একটি র্যাবের জ্যাকেট, দুটি ওয়াকিটকি সেট, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, একটি এনআইডি কার্ড, দুটি মানিব্যাগ, একটি লেজার লাইট, ব্যাগ, ছয়টি মোবাইল ফোন এবং ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে বাহিনীটি।
তারা সবাই কাওসার বাহিনীর সদস্য এবং দুর্ধর্ষ ডাকাত বলে জানায় র্যাব। তাদের দলনেতা কাওসার আলী।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলীতে র্যাব-৩ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, ডাকাতদলের সর্দার কাওসার আলী নিজেকে ডিবি পুলিশের এএসপি, মামুন ডিবি পুলিশের ওসি, আলী আকবর র্যাবের এসআই এবং এনামুল ডিবি পুলিশের কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতে ঘুরে বেড়ান।
তারা জনসমাগমহীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সুযোগ বুঝে ডিবি ও র্যাবের জ্যাকেট পরে যাত্রীবাহী বাসকে লেজার লাইটের মাধ্যমে গতিরোধ করে ভুয়া ডিবি ও র্যাব পরিচয় দিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে আসছিল বলে জানায় র্যাব।
চক্রটি গত ৩-৪ বছর ধরে ডাকাতি করে আসছে। এ পর্যন্ত ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়ক এবং মাওয়া হাইওয়ে রোডে ১৫-২০টির বেশি ডাকাতি করেছে বলেও জানানো হয়।
র্যাব জানায়, নিয়মিত বাস ডাকাতির পাশাপাশি তারা বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের ওপরও নজর রাখতেন। কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাসে উঠলে তার পিছু নিয়ে দলের একজন সদস্য ওই ব্যক্তির সঙ্গে একই বাসে চড়ে বসে। অন্য ডাকাতরা হাইওয়ের নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। এরপর বাসটি সেখানে পৌঁছালে লেজার লাইটের মাধ্যমে বাস থামিয়ে মাদক কারবারি বা অপরাধী আখ্যা দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে বাস থেকে নামিয়ে নিজেদের মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর তার কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
আসামিদের সম্পর্কে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক জানান, ডাকাতদলের সর্দার কাওসারের নামে বিভিন্ন থানায় তিনটি ডাকাতি ও ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে।
কাওসার বিভিন্ন সময় বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে তার সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে।
তার প্রধান সহযোগী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নামে একটি ডাকাতি, দুটি অস্ত্র মামলা, দুটি ভুয়া সরকারি কর্মচারী পরিচয় দিয়ে প্রতারণা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
আলী আকবর মুন্সীগঞ্জ এলাকা থেকে এবং ইমামুল গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকা থেকে কাওসার বাহিনীর সঙ্গে ঢাকায় বস্তিতে এসে সমবেত হয়ে ডাকাতি করতেন বলে জানায় র্যাব।