বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেল মাইক্রোবাস, বেঁচে যায় ১৬ শিশুশিক্ষার্থী

  •    
  • ৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৫:৪৬

মাইক্রোবাসে থাকা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী উম্মে রুমান রুসনী তার ঘাড়ে আঘাত পায়। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গিয়ে রুসনী বলে, ‘অনেক দূর থেকে ট্রেনের বাঁশি (হুইশেল) শুনতে পাচ্ছিলাম। আমরা মাইক্রো থেকে নেমে যেতে চেয়েছিলাম, তখন ভাইয়া (চালক) বললেন যে কিছু হবে না, তোমরা বসে থাকো, ট্রেন চলে যাবে।’

ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসের ১৬ শিশুশিক্ষার্থী অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায়। আহত হয় অন্তত দুই শিশু। দুর্ঘটনার পরই পালিয়ে যান চালক।

রেললাইন ঘেঁষে পার্ক করা ছিল মাইক্রোবাসটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের সঙ্গে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধাক্কা লাগে মাইক্রোবাসটির। সৌভাগ্যক্রমেই বেঁচে যায় স্কুলের উদ্দেশে যাওয়া মাইক্রোবাসের ১৬ শিক্ষার্থী। তাদের বয়স ৬-৮ বছরের মধ্যে। তারা সবাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের এশিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে দুই থেকে আড়াই শ মিটার দূরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা মাইক্রোবাসের মধ্যে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন।

মাইক্রোতে থাকা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী উম্মে রুমান রুসনী ঘাড়ে আঘাত পায়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রুসনী বলে, ‘অনেক দূর থেকে ট্রেনের বাঁশি (হুইশেল) শুনতে পাচ্ছিলাম। আমরা মাইক্রো থেকে নেমে যেতে চেয়েছিলাম, তখন ভাইয়া (চালক) বললেন যে কিছু হবে না, তোমরা বসে থাকো, ট্রেন চলে যাবে।’

রুসনীর নানা ওমর ফারুক বলেন, ‘যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখনই রিকশা লিয়্যা বাড়ি আসছিনু, দেখি হামার নাতিনের স্কুলের মাইক্রো ট্রেনে ধাক্কা ল্যাগা পড়া আছে। তখন হ্যামি রুসনী, হামারঘে পাড়ার মেহেরারকে রিকশাতে কর‌্যা বাড়ি লিয়্যা আসি। হামার নাতিনের ঘাড়ে ল্যাগাছে, মেহরাবের হাতে লাগাছে।’

এশিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজর অধ্যক্ষ সঞ্জয় কুমার জানান, ‘সকালে শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে স্কুলে নিয়ে আসার পথে মাইক্রোবাসটির তেল (জ্বালানি) শেষ হয়ে যায়। তখন চালক, আমাদের আরেকটি মাইক্রোবাসের চালককে ফোন দিয়ে হাজির-মোড় এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে বলে। ওই মাইক্রোটি অন্যদের স্কুলে নামিয়ে, যেখানে যাচ্ছিল। তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। মাইক্রোর ক্ষতি হলেও শিশুরা অক্ষত ছিল। মাইক্রোবাসটি রেললাইন থেকে আরেকটু দূরে রাখলেই দুর্ঘটনা ঘটত না।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার শহিদুল আলম জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ইশ্বরদীগামী ডাউন ট্রেনটি সকাল সাড়ে ৮টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। এর দুই-তিন মিনিটের মাথায় রেলস্টেশন ও হাজির মোড়ের মাঝামাঝি স্থানে রেললাইনের পাশেই পার্ক করে রাখা একটি স্কুলের শিক্ষার্থীবহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। মাইক্রোবাসটিতে থাকা বাচ্চাগুলো অলৌকিক ভাবে বেঁচে যায়। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফারুক হোসেন জানান, ঘটনাস্থল ও মাইক্রোবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা। মাইক্রোবাসটি তাদের হেফাজতে থাকলেও চালক পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

এর আগে ওই পথে হাজির মোড়ে ট্রেনের ধাক্কায় ভটভটিতে থাকা তিন মৎসজীবীর মৃত্যু হয়। এ বছরের ২৪ জানুয়ারির ওই দুর্ঘটনার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। রেললাইনের পাশে রাস্তা না রাখার সুপারিশও করা হয়েছিল। তবে এখনও বিপজ্জনকভাবেই রেলের পাশ দিয়ে বিভিন্ন যানবহন চলাচল করছে।

এ বিভাগের আরো খবর