সারা দেশের কারাগারে ৮৮ জন কারারক্ষীর নিয়োগ নিয়ে জালিয়াতির যে ঘটনা প্রকাশ হয়েছে সে বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) কি ব্যবস্থা নিয়েছেন তা আগামী এক মাসের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে রিট আবেদনকারী জাহিরুল ইসলামের নামে যে জহিরুল চাকরি করছেন তাকে সনাক্ত করে প্রকৃত জহিরুলকে কেন নিয়োগ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
কারারক্ষীপদে চাকরি ফিরে পেতে জহিরুল ইসলাম এশুর করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবুল কালাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে ডিএজি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের জানান, সারা দেশে বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেট কারাগারে ২০০ জন কারারক্ষীর জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি গ্রহণের একটি সংবাদ একটি টিভি চ্যানেলে প্রকাশ হয়। এ সংবাদের পর কারাকর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পেয়েছে।
তিনি জানান, এর মধ্যে তিনজন ছদ্মবেশে প্রকৃত ব্যক্তির স্থলে তারা চাকরি করছেন। তার থেকে দু জনকে অপসারণ করা হয়েছে। আর একজন হলেন রিট আবেদনকারী জহিরুল ইসলাম। আদালত এই রিটের শুনানি নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছে।
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, শুনানি শেষে আবেদনকারী জহিরুল ইসলাম এশুকে কেন তার চাকরি ফিরিয়ে দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা এক মাসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
চাকরি ফিরে পেতে চান কুলাউড়ার জহিরুল
‘জালিয়াতি করে কারারক্ষী পদে চাকরি ১৮ বছর পর তদন্তে প্রমাণিত!’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জহিরুল ইসলাম এশু। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, কারা মহাপরিদর্শক, কারা উপমহাপরিদর্শক, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার, কারারক্ষী হিসেবে চাকরিরত জহিরুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য ২০০৩ সালে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন কুলাউড়ার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এশু। নিয়োগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর যোগদানপত্র না পাওয়ায় চাকরির আশা ছেড়ে শহরে ব্যবসা শুরু করেন।
‘কিন্তু দীর্ঘ ১৮ বছর পর জানতে পারেন প্রতারণার মাধ্যমে তার নাম পরিচয় ব্যবহার করে ওই পদে চাকরি করছেন আরেকজন। আর ইতোমধ্যে জালিয়াতির বিষয়টি তদন্তেও সত্যতা পাওয়া গেছে।’ এর প্রেক্ষাপটে চাকরি ফেরত চান জহিরুল ইসলাম এশু।