লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মেঘনা নদীতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, আরও একজনের খোঁজ মিলছে না।
বুধবার ভোররাতে উপজেলার চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
আহত মো. আব্বাস কমলনগর উপজেলার চরফলকন এলাকার তসির আহম্মদের ছেলে, মো. ইউসুফ রামগতির পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামের মো. ইউনুসের ছেলে ও মো. ফারুক নোয়াখালীর সুবর্ণ চরের আলমগীর ফরাজির ছেলে। নিখোঁজ মহিউদ্দিন নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকার নানু ফরাজির ছেলে।
নৌ-পুলিশ ও আহতরা জানান, রাতে আব্বাস মাঝিসহ ছয়জন জেলে মেঘনায় মাছ শিকারে যান। নদীতে জাল ফেলার প্রস্তুতির সময় হঠাৎ একদল জলদস্যু জেলেদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তিন জেলে গুলিব্ধি হন। একজনকে নিয়ে যায় জলস্যুরা।
খবর পেয়ে ভোররাতে কমলনগর উপজেলার লুধুয়া মৎস্যঘাট এলাকার আড়ৎদাররা ঘটনাস্থল পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ নিয়ে গত দুই মাসে প্রায় ২৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতের হামলা মারা গেছে দুইজন। আহত হয়েছে শতাধিক জেলে।
গুলিবিদ্ধ জেলে ফারুক ও ইউসুফ মাঝি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১০-১২ জনের একদল জলদুস্যু তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে তারা। নৌকায় থাকায় মালামাল লুটে নেয় তারা।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ভোরে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের হাত-পায়ে গুলি লেগেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। ২৪ ঘন্টা যাওয়ার পর বলা যাবে তাদের কি অবস্থা। চিকিৎসা চলছে।
বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘ভোররাতে মেঘনা নদীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগ রয়েছে, রামগতির চরগজারিয়া, বয়ারচর, চর আবদুল্লাহ, তেলিরচর, মতিরহাট এবং তার আশপাশের জেলেরা নদীতে যাচ্ছেন না জলদস্যু ও ডাকাত আতঙ্কে। কালা জাকের, বাদশা, মহিউদ্দিন পলাশসহ ২০-২৫ জলদস্যু নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই জেলেদের ওপর হামলা করে নৌকা, জাল ও মাছ এবং নগদ টাকা লুটে নিয়ে যায় দস্যুরা। বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে তাদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হয়। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট জেলেরা। দ্রুত ডাকাত ও জলদুস্যর উৎপাত বন্ধ না হলে এটি আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন জেলেরা।