বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিরাজগঞ্জে বেজি আতঙ্ক, ছোটদের নিয়ে উৎকণ্ঠা

  •    
  • ৯ নভেম্বর, ২০২২ ১০:০৯

সিরাজগঞ্জে সকালে ও সন্ধ্যার দিকে মানুষকে বেশি আক্রমণ করছে বেজি। হঠাৎ করে এটি প্রাণীটির কামড়ের মাত্র বেড়ে যাবার কারণে অনেকেই দিনে ও রাতে পথ চলতে ভয় পাচ্ছেন। বিশেষ করে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে অভিভাবকেরা।

সিরাজগঞ্জের বাসিন্দাদের এখন বড় আতঙ্ক হয়ে উঠেছে বেজি। হঠাৎ করেই জেলাতে বেড়ে গেছে বেজির উপদ্রব। গত ২০ দিনে সেখানে অন্তত ১২০ জনের বেশি মানুষ বেজির কামড়ের শিকার হয়েছেন। বেজির এমন আক্রমণাত্মক আচরণে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়েও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বড়রা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খুব ভোরে এবং সন্ধ্যা থেকে শুরু করে মধ্য রাতের কিছু সময় পর্যন্ত বেজির আক্রমণ বেড়ে যায়। মানুষ দেখলেই দিচ্ছে কামড়।

এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, বেজির কামড়ে শরীরে নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে এর কামড়ের ফলে জলাতঙ্ক রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

আমাদের সমাজে সকলেই কম বেশি বেজির সঙ্গে পরিচিত। বেজিকে বলা হয় উপকারী প্রাণী। বেজি বিষধর সাপ মারে ও সাপের ডিম খায়। আবার ধান ক্ষেতের ইঁদুর খায়। অথচ এই বেজি এখন মানুষের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেজি কম বেশি মানুষকে কামড়ালেও বর্তমানে তার মাত্রা বেড়ে গেছে।

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ সদর ও এর আশপাশের উপজেলায় বেজির মানুষকে কামড়ানোর ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বেজিরা দিনের বেলা খারার সংগ্রহ করে আর রাতে তাদের গর্তে থাকতে পছন্দ করে।

তবে এখন দেখা যাচ্ছে বেজি সকালে ও সন্ধ্যার দিকে মানুষকে বেশি আক্রমণ করছে। সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার গোশালা, মালশাপাড়া, এস.এস রোড, ধানবান্ধী এলাকাসহ সদর উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে বেজির কামড়ের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। হঠাৎ করে বেজির কামড়ের মাত্র বেড়ে যাবার কারণে অনেকেই দিনে ও রাতে পথ চলতে ভয় পাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছে অভিভাবকেরা।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গোশালা মহল্লায় গত ১৫ দিনে প্রায় ১০ জন বেজির কামড়ের শিকার হয়েছেন।

বেজির কামড়ের শিকার হওয়া গোশালা এলাকার রাজিব বলেন, ‘আমি সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় হঠাৎ করে বেজি দৌড়ে এসে কামড়িয়ে চলে যায়। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে আমার। একই এলাকায় এক গৃহিনী দুপুরে বাড়ির বারান্দায় রান্নার জন্য সবজি কাটার সময় বেজি তার হাতে কামড় দেয়। অন্যদিকে মাসাপাড়া এলাকায় রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক শ্রমিক বেজির আক্রমণের শিকার হয়।

বেজির হঠৎ করে এমন বেশি পরিমাণে কামড়ানোর ফলে অভিভাবকেরা তাদের ছোট সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা পড়ছেন। পৌর এলাকার ধানবাড়ি মহল্লার তুষার শেখ জানান, আমার ছোট ছেলে একদিন স্কুলে যাবার সময় বেজির ধাওয়া খেয়ে চিৎকার করে বাড়িতে চলে এসেছিলো। এছাড়াও ছোট ছেলে মেয়েরা এখন বেজির ভয়ে বিকেলে বাড়ির বাইরে খেলতে যেতেও ভয় পাচ্ছে।

এদিকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফয়সাল আহম্মদ নিউজবাংলাকে বলেন, আগেও বেজি কামড়ে আক্রান্তরা আসতো। তবে গত এক মাস ধরে বেজি কামড়ের রোগীরা বেশি সংখ্যায় আসছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ জন বেজি কামড়ের রোগী হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে। এসব আক্রান্ত রোগীর মধ্যে গ্রাম অঞ্চলের মানুষই বেশি।

তিনি আরও জানান, বেজি কামড়ানো রোগীরা এটাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া দরকার। তা না হলে জলাতঙ্ক থেকে শুরু বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

এদিকে এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: গৌরাংগ কুমার তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেজি আসলে একটি বন্য প্রাণী। হঠাৎ করে বেজির এমন আচারণের কারণ সম্পের্কে জানতে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।’

বেজি কামড়ের পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার বিষয়ে জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। প্রযোজনে আরও ভ্যাকসিন দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর