সিলেটে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডের ৪৯ ঘণ্টা পর ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে।
কামালের ভাই মইনুল হক বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নগরের এয়ারপোর্ট থানায় এ মামলা করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
তিনি জানান, মামলায় আজিজুর রহমান সম্রাটকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে সব আসামির নাম বলতে চাননি তিনি।
মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানান আজবাহার।
রোববার রাত ৯টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা বড়বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল।
ব্যবসায়িক বিরোধে কামাল খুন হতে পারেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর বিএনপির পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল সিলেট বিমানবন্দর এলাকা থেকে আম্বরখানা বড়বাজার হয়ে গোয়াইটুলার দিকে যাচ্ছিলেন। তার গাড়িকে অনুসরণ করছিল দুটি মোটরসাইকেল। বড়বাজারের ১১৮ নম্বর বাসার সামনে কামালের গাড়ির গতিরোধ করে বাইক আরোহীরা। পরে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই কামাল মারা যান জানিয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামছুল ইসলাম বলেন, কামালের দেহে ২৫টি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার বাঁ হাতে ১৬টি, বাম বগলের নিচে ২টি, বুকের বামপাশে ১টি ও বাঁ পায়ে ৬টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আ ফ কামাল খুনের ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয় পাঁচজন। এরমধ্য আজিজুর রহমান সম্রাট, শাকিল ও রাজু নামের তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে সম্রাট আগে ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। বর্তমানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, আ ফ ম কামাল রাজনীতির পাশাপাশি পাথর ব্যবসা এবং নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি তার ট্রাভেল এজেন্সি থেকে আজিজুর রহমান সম্রাটের আত্মীয়কে সৌদি আরব পাঠানো নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সম্রাট ২১ অক্টোবর কামালসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এরই জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, আ ফ ম কামাল হত্যার প্রতিবাদে সিলেটে ছাত্রদলের মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার দিনে কতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের আটকের পর মঙ্গলবার বিকেলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ইশতিয়াক আহমদ রাজু, বদরুল ইসলাম নজরুল, মিলাদ আহমদ ও রাজীব আহমদ। তারা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।