কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষিকা রোকসানা খানম খুনের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি ভাতিজা ভাতিজা নওরোজ করিম নিশাত।
মঙ্গলবার কয়েক ঘণ্টা বসে থেকে জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানালে আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠায়।
এর আগে গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কুষ্টিয়া শহরে হাউজিং ডি-ব্লকের ২৮৫ নং নিজ বাড়িতে খুন হন জিলা স্কুলের শিক্ষিকা রোকসানা খানম। ছয়তলা বাড়িটির দোতলায় থাকতেন তিনি। তার স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান যশোরে এলজিইডিতে চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। এই দম্পত্তির কোনো সন্তান ছিল না। একই বাড়ির চার তলায় থাকেন তার ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তানরা।
মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ এ হত্যার এমন মোটিভ বের করে যে, সবাই হতবাক হয়ে যায়।
হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডিবি পুলিশ নিহতের ভাইয়ের ছেলে নিশাতকে সোমবার রাতেই গ্রেপ্তার করে।
মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরে নিহতের স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় নিশাত ছাড়াও আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফুফুকে হত্যার কথা নিশাত স্বীকার করেন বলে জানান ডিবি ওসি নাসির উদ্দিন।
ওসি জানান, নিশাতের অনলাইনে জুয়া খেলায় আসক্তি আছে। এ কারণে তিনি ফুফুর কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিতেন। ফুফু তাকে যে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন, সেটাও বিক্রি করে জুয়ায় হেরেছেন নিশাত।
জুয়া নিয়ে বকাবকি করায় নিশাত তার ফুফুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
এ অবস্থায় রোববার সন্ধ্যায় রোকসানা বাড়ির ছাদে উঠলে সেই সুযোগে তার ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে ঢুকে আত্মগোপন করেন নিশাত। ফুফু ঘুমিয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন।
নিশাত পুলিশকে আরও জানান, হত্যার পর তিনি রোকসানার মোবাইল ফোন থেকে নিজের মোবাইলে কয়েকটি মেসেজও পাঠান। সেখানে সকালে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। এগুলো পুলিশকে দেখিয়ে তিনি প্রথমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
ওসি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিশাত হত্যার কথা স্বীকার করেন। হত্যার পর তিনি বাসার বারান্দার ওপরের ডিজাইন করা গোল ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যান।