রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক রুমা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
মঙ্গলবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২৩ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ঠিক করে আদালত।
এদিন রুমা সরকার আদালতে হাজিরা দেন। তার পক্ষে আইনজীবী অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় আদালত।
এ সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান রুমা সরকার।
গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাজধানীর বেইলি রোডের বাসা থেকে রুমা সরকারকে আটক করে র্যাব-৩।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করে।
রুমা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নোয়াখালীর যতন সাহার হত্যা’ শিরোনামে একটি অন্য ঘটনার ভিডিও আপলোড করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের হয়ে গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালান; যা বিভ্রান্তিমূলক।
প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি ২০২১ সালের ১৬ মে ঢাকার পল্লবী থানার ডি-ব্লকের শাহিন উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার।
যে সময় রুমা সরকার ভিডিওটি আপলোড করেন তখন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা চলছিল এবং সে সময় সহিংসতাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনা ঘটানো হচ্ছিল। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে রুমা সরকার ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর বেলা ২টা ৩৫ মিনিট থেকে ২টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত ফেসবুক লাইভে আসেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করে যতন সাহার মৃত্যুর দৃশ্য দেখে ফেলেছিলাম। গরুর মাংস যেভাবে কুপিয়ে বানায়, আহা হিন্দুদের প্রতি তোর এত ক্ষোভ। তোরা অমানুষ, হত্যার পর এই ভাবে কুপালি ক্যান?’
দেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে নাজুক পরিস্থিতিতে তার লাইভ ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ দিকে নিয়ে যাচ্ছিল বলে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে বলে জানায়।